বাংলা যুক্তবর্ণের গঠন-বিবর্তন
==========================
সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতে হবে
বিনামূল্যে সর্বান্তিক বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নিচের এই লিংকে ক্লিক করে
উন্নত বাংলা ফন্ট সর্বান্তিক ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে পড়তে হবে বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক:--
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet
setting)
(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)
on
internet(Mozilla Firefox)
(top
left) Tools
Options > contents
Fonts & Colors
Default font:=AhanLipi-Bangla14
Advanced...
Fonts for:
=Bengali
Proportional
= Sans Serif, Size=20
Serif=AhanLipi-Bangla14
Sans
Serif=AhanLipi-Bangla14
Monospace=AhanLipi-Bangla14, Size=20
-->OK
Languages
Choose your preferred Language for
displaying pages
Choose
Languages in order of preference
Bengali[bn]
-->OK
--> OK
এবারে
ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে নেটে একই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
===========================
বাংলা যুক্তবর্ণের গঠন-বিবর্তন
মনোজকুমার দ.গিরিশ
বাংলা যুক্তবর্ণের গঠন সাধারণ বাংলা বর্ণের থেকে অনেকটাই পৃথক এই পৃথক গঠন কেমনভাবে তৈরি হল তা বোঝা কঠিন, তাই এসব গঠন কেমন করে এলো তা নিয়ে কিছু অনুমান করা যাক এসব অনুমান কোনও অনুসন্ধান ভিত্তিক বা তত্ত্ব ভিত্তিক নয় এসব কেবলমাত্র অনুমানই তবে এসব অনুমান ইত্যাদি দেখে কেউ যদি তাত্ত্বিক গবেষণা করে আমাদের সত্য চিত্রটি উপহার দেন সেই আশায় এসব বালখিল্য অনুমান জনসমক্ষে তুলে ধরা হল ব্যাপারটি নিয়ে পাঠক প্রতিক্রিয়া জানার ইচ্ছে রইল
বর্ণের অযুক্ত গঠন --
দশ = দেশ, বশ = বেশ
যুক্তবর্ণের গঠনসমূহ __
বাংলা যুক্তবর্ণের অনেকগুলিই মণ্ড হরফ
হাতে করে লেখার সুবিধার জন্য বা দ্রুত লেখার কারণে এখানকার সংযুক্ত
চ-কে ব-এর মতো করে লেখা হয়
প্রাচীন দিনে ণ লেখা হত ল-এর মতো করে দুটি বর্ণের মধ্যে তফাৎ বোঝা কঠিন হত
এটি ত্ত= দেখতে যেন উপরে মাত্রা দেওয়া স্বরবর্ণের “ও”
এটি ত্র () দেখতে যেন উপরে মাত্রা দেওয়া স্বরবর্ণের “এ”
ন-এর সঙ্গে সংযুক্ত অংশটি অসম্পর্কিতভাবে হ-এর মতো দেখতে
হলেও এটি আসলে থ-এর কর্তিত প্রথম অর্ধ-অংশ
প্রাচীন দিনে ণ লেখা হত ল-এর মতো করে
দুটি বর্ণের মধ্যে তফাৎ বোঝা কঠিন হত
তাই ষ্ + ণ = ষ্ণ=গঠন বোঝাও কঠিন হত
দেখে এটি ষ্ + ঞ মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে তা নয়
“স্মরণযোগ্য: ঞ-এর আকৃতিগত প্রভাবেই...”
বাংলাদেশের পুথিবিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ শাহজাহান মিয়া লিখিত
‘বাংলা পাণ্ডুলিপি পাঠসমীক্ষা’ [ বাংলা একাডেমী:ঢাকা, প্রথম
প্রকাশ ফেব্রুয়ারি-১৯৮৪, পৃঃ ৪৪, অনুভাগ ১১. (ক) ]
হ্য-এর উচ্চরণ জ্ঝ-এর মতো(দাহ্য=দাজ্ঝ), কিন্তু__
হ্যান্ড, হ্যাঁ, রিহ্যাবিলিটেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর
উচ্চারণ সমপূর্ণ ভিন্ন এমনিভাবে এই সকল বিবর্তন
হয়ে থাকতে পারে তবে এর সবকিছু সোজাভাবে
সহজে ব্যাখ্যা করা যাবে না এ-বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ
গবেষণা হওয়া দরকার
এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত শুনলে পাঠকদের
অস্পষ্টতা কেটে যাবে বলে মনে হয় বাংলাদেশের
পুথিবিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ শাহজাহান মিয়া লিখিত
‘বাংলা পাণ্ডুলিপি পাঠসমীক্ষা’[ বাংলা একাডেমী:ঢাকা,
প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি-১৯৮৪], গ্রন্থে যুক্তবর্ণের মণ্ডরূপ
বা মণ্ডগঠন বিষয়ে বলেছেন, “একে তো বিভিন্নরকম
পরিমাণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে শব্দগুলির রূপভেদ সব
সময়েই ঘটছিল, তার উপরে নিজের পছন্দ মতো
‘রূপ’(shape) বের করার দিকে সংশ্লিষ্ট লিপিকরদের
নজর ছিল এর মধ্যে আবার যদি ইচ্ছে করে বা
স্পষ্টতই খানিকটা ভুল বুঝবার সম্ভাবনা রেখে দেওয়া
হয়, তবে মানুষের বুদ্ধি এ অনর্থ ঘটাবার সুযোগ
ছাড়বে কেন?”(পৃঃ ২৬) লেখক পরে টীকায়
জানিয়েছেন যে, “এক্ষেত্রে স্মরণযোগ্য যে, প্রাচীন
পুথিগুলি প্রতিলিপিপরম্পরায় চালু ছিল”(পৃঃ ৪৪)
লেখক দেখিয়েছেন হাতে লেখা ‘ও’ আকৃতির
উপরে অর্ধমাত্রা এবং পূর্ণমাত্রা ব্যবহার করে বোঝানো
হত-- তু, ত্ত আর ও-এর সঙ্গে ক-এর আঁকড়ি জুড়ে
হত ক্ত= অর্থাৎ প্রায় একই ধরণের অবয়বের
একটু হেরফেরে হত-- ও, তু, ত্ত, ক্ত উল্লেখ্য
প্রাচীন দিনে ঙ্গ-এর মতো অবয়বের একটু হেরফেরে
বোঝানো হত-- ==(ঙ্গ)= ঈ, কু, কৃ, গ্গ, ঙ্গ, জ্ঞ, দ্দ, দ্ধ (৮ রকম)
অর্থাৎ ‘সঙ্গীহীন ঙ্গগল বিশুঙ্গ ঙ্গশ মুখে বিঙ্গের
মত নিরুঙ্গেশ হল’
এই কথাটি আসলে হল-- সঙ্গীহীন ঈগল বিশুদ্ধ
কুশ মুখে বিজ্ঞের মত নিরুদ্দেশ হল ঙ্গ ধরনের
রূপটি এখন আর তার সেই অবস্থানে নেই
“মিতলেখনের দিক থেকে যুক্তবর্ণগুলি একটু
বেশিরকম দরকারি বলেই মনে হতে পারে
কারণ, বাংলালিপির ধারণ ক্ষমতা এ যুক্তবর্ণগুলির
বদৌলতে অনেকখানি বেড়ে যায় ...সংশ্লিষ্ট
হরফগুলির ধারক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া অধিকাংশ
যুক্তবর্ণই বস্তুত আমাদের কাছে অস্পষ্ট হলেও
আমরা অবলীলাক্রমে সেগুলির ব্যবহার করি সাধারণত
আমাদের মনে এ নিয়ে কোন বিতর্ক জাগে না,
কিংবা জাগলেও আমরা তা নিবৃত্ত করে রাখি
...পরবর্তীকালে সেগুলিই যে দ্রুতলিখন প্রবণতায়
অস্পষ্ট হয়ে গেছে; তা বলা যায় ...এসব যুক্তবর্ণ
আজকে যে অবস্থায় এসে আমাদের হাতে ধরা
দিয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে জানতে হলে অথবা
সেগুলির অন্তর্নিহিত বর্ণসমূহের অবয়ব সঠিকভাবে
শনাক্ত করতে হলে, আমাদের আজকের দিনের
বাংলা বর্ণমালার মূল হরফ অবয়বকে মাপকাঠি
হিসেবে ধরে নিলে চলবে না ...অধুনা প্রচলিত
হরফদেহে এগুলির সন্ধান করতে যাওয়া শুধু যে
ফলপ্রদ নয়, তা-ই নয়; রীতিমতো ভ্রান্তিজনকও বটে
সেই সঙ্গে এ প্রয়াস রীতিমতো গোঁজামিলের
...প্রচলিত যুক্তবর্ণ সম্পর্কে আরও একটি কথা
বিশেষভাবে বিবেচ্য সে হল:- এগুলির একই
যুগে একই সময়ে গঠিত হয়েছিল, এমন নয়;
বরং বিভিন্ন যুগে ও বিভিন্ন সময়ে গঠিত
হয়েছিল” (পৃঃ ১৯৮ - ৯৯)
সুতরাং এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে,
বিশেষজ্ঞদেরই যখন এ ব্যাপারে হিমসিম খেতে
হচ্ছে, তখন আনাড়িদের এ ব্যাপারে প্রয়াস গোঁজামিলের
পরিসর বাড়াতে থাকবে! বাংলা মূল
হরফ/বর্ণ/অক্ষর/লিপির বর্তমান যে রূপ তা
আধুনিক কালের এই রূপের সঙ্গে প্রাচীন দিনের
হরফ গঠনের প্রায় কোনওই মিল ছিল না
বাংলা বর্ণের আদি, তথা উৎস হল ব্রাহ্মী লিপি
বর্তমান বাংলা হরফের এতই বিবর্তন হয়েছে যে,
ব্রাহ্মী হরফের সঙ্গে তার কোনও সাদৃশ্য খুঁজে
পাওয়া যাবে না যেমন ‘ক’ ছিল দেখতে
প্রায় “+” এই রকম দেশখ্যাত ঐতিহাসিক
ও প্রত্নতাত্তিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছেন
যে, যোগ চিহ্নের মত এই হরফটি (+) দ্রুত
লেখার কারণে “+” চিহ্নটির নীচের অংশ কোণাকুনি
জুড়ে যায় (+ → ) এবং যোগ চিহ্নের সামনের
অংশটি একটু ঘুরে নীচের দিকে নামে ( ), ফলে
তা ক্রমে ‘ক’-এর আকৃতি পায়(“+” → → )
যা হোক, যুগে যুগে বিবর্তিত হতে হতে তা
বর্তমান রূপে পৌঁছেছে হাতে লেখা পুথির যুগের
হরফের সঙ্গে বর্তমান বাংলা লিপির মিল খুঁজে পাওয়া
বেশ কঠিন তাই বাংলা প্রাচীন পুথি পাঠ খুবই
দুরূহ কাজ এমনকি প্রথম ছাপা হরফের থেকেও
বর্তমান বাংলা লিপির বেশ খানিকটা পরিবর্তন ঘটেছে
অন্তত সৌন্দর্যের বিচারে তো বটেই এখানে লেখার
প্রকৃতিও ছিল খানিকটা পৃথক, যেমন ‘অংশ’ লেখা
হয়েছে “অ৹শ” ইত্যাদি আর প্রাচীন বানানেরও
বেশ পরিবর্তন হয়ে চলেছে ‘দেশ’ সাময়িক পত্রিকায়
(এখন তার চলছে ৭৬ বছর) ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের প্রকাশিত
রচনার পুনর্মুদ্রণ করে শেষে লেখা হয়েছে ‘পুরনো
বানান অপরিবর্তিত’ অথচ এই ১৯৩৭-এ কোলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বানানের সংস্কার করেছিলেন
(তৃতীয় সংস্করণ ২০মে, ১৯৩৭) তাই, বাংলা যুক্তবর্ণের
গঠন বিবর্তন এখানে যা দেখানো হয়েছে, তা
একেবারেই কাল্পনিক এসব কেবল গোঁজামিলের
পরিসরই বাড়িয়েছে, তবু ভাবতে ভালো লাগল
পাঠকেরাও এমনি কল্পনার জাল বুনুন না!
-- ০ --
২টি মন্তব্য:
durdanto procheshta...
onek onek shuvechchha o shuvo kamona
লেখাটি ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত আসলে এটি একটি সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক রচনা এটি পাঠকদের ভালো লাগার চেয়ে অনেক বেশি বিতর্ক তৈরি করবে বলে আশংকা ছিল শুভেচ্ছা জানানোর জন্য অপরাজিতাকে অনেক ধন্যবাদ
মনোজকুমার দ. গিরিশ
কোলকাতা
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন