===========================
সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতে হবেবিনামূল্যে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে
উন্নত বাংলা ফন্ট ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’
https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
===========================
বাংলার ইতিহাস
কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা
ইতিহাস অনুসন্ধান চলতেই থাকে, তাই তার ব্যাখ্যা বিবরণ বাড়তেই
থাকে বাংলার ইতিহাসের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না
গ্রন্থ সহায়তা:--
১)বাঙ্গালা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা-- শ্রীসুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
(ক.বি.-১৯৭৪)
২)ইতিহাস অভিধান(ভারত) ২য় সং ১৯৮২ -- যোগনাথ মুখোপাধ্যায়
৩)বঙ্গঅভিধান ১ম সং ১৯৯৯ -- যোগনাথ মুখোপাধ্যায়
নোট: প্রথম শতাব্দী =১ থেকে ১০০,
দ্বিতীয় শতাব্দী=১০১ থেকে ২০০খ্রিস্টাব্দ অবধি
তৃতীয় শতাব্দী=২০১-৩০০খ্রিঃ
যে শত-বছরে শতক শেষ হয় সেটাই সেই শতাব্দী
খ্রিস্টপূর্বাব্দ
৩০০ আনুমানিক : মৌর্যবিজয় বাংলাদেশে আর্য ভাষা সংস্কৃতির প্রসার
০০০খ্রিস্টাব্দ__
১০০খ্রিস্টাব্দ__
২০০খ্রিস্টাব্দ__
৩০০খ্রিস্টাব্দ__
৩৫০ :বঙ্গদেশে গুপ্তসম্রাটগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশে উত্তর ভারতের সভ্যতার সভ্যতার প্রসার
৩০০-৪০০ এবং তার পরবর্তী :পশ্চিমবঙ্গের ২৪পরগনা জেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক স্থান চন্দ্রকেতু গড় গুপ্তযুগের একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এখানে পাওয়া গেছে ৩০০-৪০০ এবং তার পরবর্তী কালেরও অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শনও এখানে পাওয়া গেছে
৪০০খ্রিস্টাব্দ__
৫০০খ্রিস্টাব্দ__
৬০০খ্রিস্টাব্দ__
ষষ্ঠ শতকের শেষ :গুপ্ত সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়লে বঙ্গদেশে বঙ্গ ও গৌড় নামে দুটি রাজ্য গড়ে ওঠে বঙ্গ গঠিত হয় __পূর্ববঙ্গ, দক্ষিণ বঙ্গ ও পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ অংশ নিয়ে আর গৌড় গঠিত হয় __উত্তরবঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশ নিয়ে আনুমানিক ষষ্ঠ শতকের শেষ ভাগে শশাঙ্ক নামে এক বাঙালি সামন্ত রাজা স্বাধীন গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে গৌড় রাজ্যে অরাজকতা দেখা দেয় এই দুরবস্থা চলতে থাকার শতাব্দীকাল পরে বঙ্গদেশের জনগণ গোপাল নামে এক প্রতিপত্তিশালী সামন্তকে বঙ্গদেশের রাজা নির্বাচিত করেন(আনুমানিক ৭৫০ খ্রিঃ) এটাই সম্ভবত প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের
প্রথম ধাপ
৭০০খ্রিস্টাব্দ__
সপ্তম শতক :চিনা পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং তাম্রলিপ্ত বন্দর দিয়ে স্বদেশ যাত্রা করেন পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত তাম্রলিপ্ত, বর্তমানে তমলুক নামে পরিচিত প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত ছিল একটি বড় বন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র এই বন্দর দিয়ে পূর্ব-ভারতীয় দ্বীপময় দেশগুলির সঙ্গে বঙ্গেদেশর বাণিজ্য চলত, বঙ্গের সপ্তডিঙা মধুকরের যে কল্প-কাহিনি প্রচলিত আছে তার ঐতিহ্যবাহী বঙ্গের এসকল প্রচীন নদীবন্দরগুলি কালক্রমে নদী সরে গেছে, মরে গেছে, বন্দরও ক্রমে ক্রমে বিলুপ্ত হয়েছে কোলকাতা এবং নবীন হলদিয়া বন্দর ক্রমে যে সংকটের মুখে পড়ছে
সপ্তম শতক :সম্রাট হর্ষবর্ধনের সময়কালে কর্ণসুবর্ণ গৌড়রাজ শশাঙ্কের রাজধানী ছিল এটি বাংলার প্রাচীন সমৃদ্ধ নগরী পরে গৌড় রাজ্য কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়ে গেলে কর্ণসুবর্ণ নগরীকে কেন্দ্র করে একটি স্বাধীন রাজ্য গড়ে ওঠে কর্ণসুবর্ণ নগরীর সঠিক অবস্থান এখনও নির্ণীত হয়নি অবশ্য অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে স্থানটি ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী রাঙামাটি গ্রাম এলাকা চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর বিবরণীতে কর্ণসুবর্ণ নগরীর সমৃদ্ধির বর্ণনা আছে
৭৭০-৮১০ :ধর্মপাল__ পালবংশীয় রাজা গোপালের উত্তরাধিকারীধর্মপালের পরাক্রমে পালরাজ্য একটি সাম্রাজ্যে পরিণত হয় ধর্মপালই পালবংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ক্ষুদ্র একটি রাজ্যকে তিনি বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত করেন তিনি ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মানুরাগী কিন্তু হিন্দুদের প্রতিও তিনি উদার ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় মগধে বিক্রমশীলা মহাবিহার-বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয় এছাড়া আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় তিনি স্থাপন করেন__ একটি হল ওদন্তপুরী মহাবিহার, অন্যটি সোমপুরী মহাবিহার ইতিহাসখ্যাত অতীশ দীপঙ্কর ওদন্তপুরী মহাবিহারে অধ্যয়ন করে ‘শ্রীজ্ঞান’ উপাধি লাভ করেন সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজশাহি জেলায় সোমপুরী মহাবিহারের ভগ্নাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে
৭৪০ আনুমানিক :পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠা
৮০০খ্রিস্টাব্দ__
৯০০খ্রিস্টাব্দ__
১,০০০খ্রিস্টাব্দ__
১০৩৮ আনুমানিক :দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ-- বাংলায় বৌদ্ধ আচার্য
১১০০খ্রিস্টাব্দ__
১১৫০ আনুমানিক :মহারাজ বল্লাল সেন
১১৮০ আনুমানিক :কবি জয়দেব;মহারাজ লক্ষ্মণ সেন
১২০০খ্রিস্টাব্দ__
১২০০ আনুমানিক :বিদেশীয় মুসলমান তুর্কীগণ কর্তৃক বঙ্গবিজয়ের সূত্রপাত
১৩০০খ্রিস্টাব্দ__
১৪০০খ্রিস্টাব্দ__
১৪০০ আনুমানিক :বড়ু চণ্ডীদাসের জীবনকাল শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন- রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ
১৪০০ আনুমানিক :মৈথিল কবি বিদ্যাপতির জীবনকাল
১৪১৮ আনুমানিক :দনুজমর্দনদেব-- রাজা কংস
১৪২০ আনুমানিক :রামায়ণের কবি কৃত্তিবাসের জীবনকাল
১৪৬৩-১৫১৫ :ত্রিপুরার রাজা হন ধন্যমাণিক্য, তাঁর সঙ্গে বঙ্গদেশের সুলতান হুসেন শাহের সঙ্গে বিরোধ হয় সেই সময়ে ত্রিপুরা রাজ্য সবচেয়ে বিস্তার লাভ করে পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটির সূচনাকালের ইতিহাস অস্পষ্ট গৌড়রাজের সহায়তায় রত্নফা নামে রাজা সম্ভবত সর্বপ্রথম ত্রিপুরা শাসন করেন ত্রিপুরার রাজাদের উপাধি হয় মাণিক্য বাংলার নবাব সুজাউদ্দিনের শাসনকালে ত্রিপুরা পৃথক রাজ্য থকলেও ত্রিপুরার স্বাধীনতা খর্ব হয় সে সময়ে ত্রিপুরার নাম বদলে রাখা হয় রোসেনাবাদ নবাব আলিবর্দি খাঁ ত্রিপুরা জয় করেন পরে পলাশির যুদ্ধে বাংলার নবাব(সিরাজউদৌল্লা) পরাজিত হলে ত্রিপুরা আবার স্বতন্ত্র রাজ্যরূপে জেগে ওঠে পরবর্তীকালে ত্রিপুরা ইংরেজের বশ্যতা স্বীকার করলেও কিছুটা স্বাধীন সত্ত্বাও বজায় রাখতে পারে বর্তমানে ত্রিপুরা ভারতের একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য(১৯৭২) জনসংখ্যায় বাঙালিরা প্রধান, রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা, সেখানে অন্য একটি প্রধান ভাষা হল ত্রিপুরী/ কক্বরক এখানে গড় স্বাক্ষরতার হার ৭৩%,
যা অন্যদের চেয়ে বেশি
১৪৮০ আনুমানিক :মালাধর বসু গুণরাজ খাঁ
১৪৮৬ :গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক চৈতন্যদেবের জন্ম ফাল্গুনীদোল-পূর্ণিমায় নবদ্বীপ ধামে সে দিন ছিল পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ পিতা জগন্নাথ মিশ্র, মাতা শচীদেবী বাবা তাঁর নাম দেন বিশ্বম্ভর তাঁকে অনেক নামে ডাকা হত __নিমাই, গৌরাঙ্গ, মহাপ্রভু, শ্রীকৈষ্ণচৈতন্য পিতা জগন্নাথ মিশ্র ও মাতা শচীদেবীর তিনি দ্বিতীয় পুত্র প্রথম পুত্র বিশ্বরূপ চৈতন্যদেব তথা নিমাই ছিলেন অসাধারণ মেধাবী এবং পণ্ডিত পাণ্ডিত্য অর্জন করে নবদ্বীপেই টোল খুলে অধ্যাপনা শুরু করেন ১৬ বছর বয়সে বিবাহ হয় লক্ষ্মীপ্রিয়ার সঙ্গে তিনি সর্পদংশনে মারা যান, তারপরে তাঁর মা তাঁর ভাবান্তর দেখে বিয়ে দেন সুন্দরী বিষ্ণুপ্রিয়ার সঙ্গে বিহারের গয়ায় গিয়ে পিতৃকৃত্য সম্পন্ন করতে গিয়ে বিষ্ণুর পাদপদ্ম দর্শন করে আকূল হয়ে পড়েন দীক্ষা নিয়ে ফিরে আসেন পরে মায়ের অনুমতি নিয়েই নিমাই পণ্ডিত সন্ন্যাস নেন ১৩৪১ শকাব্দের মাঘ মাসে (১৫১০ ইং) ২৪বছর বয়সে কাটোয়ায় গিয়ে সন্ন্যাসে দীক্ষা নেন, তখন নাম হয় শ্রীকৈষ্ণচৈতন্য এর পরে মানুষ ব্যাপকভাবে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করতে থাকেন তাঁর তিরোধান নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না ১৪৫৫ শকাব্দে আষাঢ় মাসে (জুলাই ১৫৩৩) তাঁর জীবনাবসান হয়
১৪৮৬-১৫৩৪[৪৯] :চৈতন্যদেবের জীবনকাল
১৪৯২ আনুমানিক :বিপ্রদাস চক্রবর্তী-- মনসামঙ্গল
১৪৯৩ আনুমানিক :বিজয় গুপ্ত -- পদ্মপুরাণ
১৪৯৩-১৫১৯ :বাংলার সুলতান হোসেন শাহ
১৫০০খ্রিস্টাব্দ__
১৫১৭ :পোর্তুগিজদের বঙ্গে আগমন
১৫২৬ :উত্তর হিন্দুস্থানে বাবর কর্তৃক মোগল সাম্রাজ্য স্থাপন
১৫৪০ আনুমানিক :বৃন্দাবনে বাঙালি বৈষ্ণব-গোস্বামীগণের প্রতিষ্ঠা
১৫৭৫ :বঙ্গে মোগল অধিকার
১৫৮০ আনুমানিক :কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম কৃষ্ণদাস কবিরাজ
১৬০০খ্রিস্টাব্দ__
১৬০০ :ভারত ও পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ইংন্ডের একদল বণিক ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে ৩১ ডিসেম্বর রানি এলিজাবেথের সনন্দ বলে উক্ত কোম্পানি উত্তমাশা অন্তরীপ থেকে সমগ্র পূর্বাঞ্চালে বাণিজ্যের একচেটিয়া অধিকার লাভ করে তারা ১৬০৮-এ মোগল সম্রাট জাহাঙ্গিরের শাসনকালে সুরাটে প্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি পায় পরে অন্যান্য স্থান সহ হুগলিতে বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়
১৬০০ আনুমানিক :কাশীরাম দাসকোলকাতায় আর্মানিগণ
১৬৪৫-৬০ :আরাকানরাজের সভাকবি আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ ও অন্যান্য কাব্য রচনার কাল
১৬৫০ আনুমানিক :চট্টল=চট্টগ্রামে আলাওল প্রমুখ মুসলমান কবিগণ
১৬৫১ :ইংরেজদের প্রথম বঙ্গে আগমন
১৬৫৩ :পূর্বভারতে চুঁচুড়ায় ওলন্দাজদের(হল্যান্ডিজ) প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপিত হয় সেখানে তারা গুস্তাফাস নামে একটি দুর্গ স্থাপন করে পূর্বভারত থেকে তাদের রপ্তানির পণ্য ছিল তাঁতের কাপড়,
সোরা, আফিম ইত্যাদি
১৬৯০ :জব চার্নক হুগলি নদীর তীরবর্তী সুতানুটি গ্রামে একটি
কারখানা বানান
১৬৯০ :ঔরঙ্গজেবের ফরমান বলে জোব চার্নক __কোলকাতা, সুতানুটি, গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে কোলকাতা শহরের পত্তন করেন(২৪ আগস্ট) কোলকাতা থাকার কালে জোব চার্নক এখানকার বহু আচার-বিধি রপ্ত করেন তিনি এক হিন্দু বিধবাকে সহমরণ থেকে বাঁচিয়ে নিজে বিবাহ করেন ১৬৫৬ খ্রিঃ তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীরূপে জীবন শুরু করেন তাঁর জীবনাবসান হয় তাঁর গড়া এই শহরেই(১০ জানুয়ারি, ১৬৯৪) সে স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে কোলকাতার বি.বা.দী বাগ অঞ্চলে কোলকাতা নামের আড়ালে অন্য দুটি গ্রাম তথা সুতানুটি, গোবিন্দপুর তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে
১৬৯১ :কোলকাতায় ইংরেজদের বসবাস
১৬৯৮ :মোগল সম্রাট ঔরংজেবের অনুমতি অনুসারে চার্নক সুতানুটিসহ কোলকাতা ও গোবিন্দপুর নামক পল্লী নিয়ে
কোলকাতা নগরীর পত্তন করেন
১৭০০খ্রিস্টাব্দ__
১৭০০ :মাণিক গাঙ্গুলি-- ধর্মমঙ্গল
১৭১১ :ঘনরাম-- ধর্মমঙ্গল
১৭১৫ :মোগল দরবার থেকে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’কে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় সেমুদ্রা মোগল সাম্রাজ্যেও চালু হয়
১৭৪৩ :বাংলা ভাষায় প্রথম মুদ্রিত পুস্তক রোমান অক্ষরে পোর্তুগালের রাজধানী লিস্বনে(Lisbon Lisboa) ছাপা পোর্তুগিজ পাদ্রী
আস্সুম্প্সাওঁ এর বই
১৭৫০ :রামপ্রসাদ ও ভারতচন্দ্রের জীবনকাল
১৭৫৬ :অন্ধকূপ হত্যা --সিরাজউদৌল্লা কোলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করলে ইংরেজরা কিছুক্ষণ বাধা দেওয়ার পরে সেদুর্গ ত্যাগ করে ফলতায় গিয়ে আশ্রয় নেয়(২০ জুন) ওই সময়ে আহত ইংরেজ সৈন্যদের দুর্গের একটি কক্ষে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রাতে আহতদের কয়েকজন মারা গেলে হলওয়েল নামে এক ইংরেজ রাজকর্মচারী অন্ধকূপ হত্যার কল্পিত কাহিনী প্রচার করে সিরাজের কুৎসা প্রচারের জন্য
১৭৫৬ :নবাব সিরাজউদৌল্লা কোলকাতা দখল করে নেবার পরে(২০ জুন) লর্ড ক্লাইভ এবং ওয়াটসন তামিলনাড়ু থেকে জাহাজযোগে সৈন্যবাহিনী নিয়ে আসেন ও কোলকাতা পুর্দখল করেন(২জানুয়ারি,১৭৫৭) দুমাস পরে ফরাসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চন্দবনগর দখল করেন ক্লাইভ প্রথমে ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কেরানি, পরে ফ্রান্স-ইংলন্ড যুদ্ধ শুরু হলে সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন নিজের যোগ্যতায় পরে উঁচু পদ পান চন্দননগর দখল করার পরে সিরাজউদৌল্লাকে উৎখাত করার জন্য সিরাজের পরিবারের কয়েকজন ও মীরজাফর, উমিচাঁদ, জগৎ শেঠ প্রমুখদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেন চুক্তি মতো কাজ হয় ও নদীয়ার পলাশির প্রান্তরে সিরাজউদৌল্লার সঙ্গে মেকি যুদ্ধ হয় সিরাজউদৌল্লা পরাজিত হয়ে পালাবার কালে ধরা পড়ে নিহত হন চুক্তি মতো মীরজাফর নবাব হন এবং ক্লাইভ নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা ও চব্বিশ পরগনার জায়গিরদারি লাভ করেন জায়গির থেকে ক্লাইভের বছরে তিন লক্ষ টাকা আয় হত পরে ১৭৬০-এ ক্লাইভ দেশে ফিরে যান এ দিকে তার অভাবে ইংরেজরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আবার ক্লাইভের ডাক পড়ে
ক্লাইভ এ দেশে আবার ফিরে আসেন ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে এবং ইংরেজ সরকারের গভর্নর নিযুক্ত হন তিনি তখন দিল্লির বাদশাহ শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করেন(১৭৬৫, আগস্ট ১২) ইংরেজরা তখনই বাংলা-বিহার-ওড়িশার প্রকৃত শাসন ক্ষমতা লাভ করে, নবাবের নামে মাত্র অস্তিত্ব থাকে
ক্লাইভ সে বছরই(১৭৬৫) স্বদেশে ইংলন্ডে ফিরে যান কিন্তু এবার তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অত্যাচার অনাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠল সে সব অভিযোগের ও বিচারের অসম্মান থেকে রেহাই পেতে লর্ড ক্লাইভ আত্মহত্যা করেন(২২ নভেম্বর, ১৭৭৪)
১৭৬৫ :লর্ড ক্লাইভকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইংলন্ড থেকে দ্বিতীয়বার বাংলা তথা ভারতে ফিরিয়ে আনে তাঁরই তৎপরতায় দিল্লির বাদশাহের কাছে দরবার করে কোম্পানি বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করে, ফলে পূর্ব ভারতের এই অঞ্চলে যে শাসন-ব্যবস্থা চালু হয় তা দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত নবাবের হাতে থাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব, আর রাজস্ব আদায় ও ব্যয়ের পূর্ণ কর্তৃত্ব পায় কোম্পানি এতে বাংলার নবাব আসলে ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে আর এই সুযোগে কোম্পানির লোকেরা খাজনা আদায়ের নামে অবাধ লুণ্ঠন ও অত্যাচার শুরু করে দেয় ১৭৭০-এ(বাংলা ১১৭৬) অনাবৃষ্টি হয়, ফসল ফলে না দেশে দেখা দেয় চরম বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ কয়েক লক্ষ মানুষ না খতে পেয়ে মারা যান এটাই ইতিহাসখ্যাত ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এই চরম বিপর্যয়ের জন্য অনাবৃষ্টি যতটা দায়ী তার চেয়ে ইংরেজ অনেক বেশি দায়ী, প্রধানভাবে দায়ী
১৭৭০ :বঙ্গাব্দের হিসেবে ১১৭৬ বঙ্গাব্দ বঙ্গ বাসীর জীবনে চরম বিপর্যয়ের বছর এটাই ইতিহাসখ্যাত ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ১৭৬৯ ছিল কার্টিয়ারের গভর্নর নিযুক্ত হবার বছর তার শাসনকালে বাংলায় সর্বনাশা দুর্ভিক্ষ হয় ক্লাইভের আমল থেকে নবাব ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বৈত শাসন শুরু হয়(১৭৬৫, আগস্ট ১২) ফলে কোম্পানির আমলা ও অনুচরদের অবাধ লুণ্ঠনও শুরু হয় প্রজাদের দুর্দশার শেষ থাকে না ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ তথা বাংলা ১১৭৬ সনে অনাবৃষ্টি হয়, জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয় কিন্তু কোম্পানির কর্মচারিদের শোষণ তবু অবাধে চলতে থাকে, নবাব তো ঠুঁটো আর কোম্পানি নির্দয় ফলে গ্রাম বাংলা শ্মশানে পরিণত হয় পথেঘাটে নারী-পুরষের অগণিত মৃতদেহ পড়ে থাকে না-খেতে পেয়ে, অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে মৃতের মিছিল বয়ে যায় কুকুর-শিয়ালে মানুষের দেহ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় খাদ্য তো দূরের কথা ভিক্ষে করে একটু ফ্যানও পাওয়া যেত না চারিদিকে কাতর আর্তনাদ “একটু ফ্যান দাও, একটু ফ্যান দাও” সে এক অতি ভয়াবহ দিন গেছে বাংলার বুকে এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বাংলার ইতিহাসে এক অতি বিপর্যয়ের বছর, যার জন্য অনাবৃষ্টি যতটা দায়ী তার চেয়ে ইংরেজ অনেক বেশি দায়ী, প্রধানভাবে দায়ী [আজও যে শিল্প না গড়ে চাষের উপরে নির্ভর করে থাকতে চাওয়া হচ্ছে, তার পরিণতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে]
১৭৫৭ :পলাশীর যুদ্ধ বাংলার নবাব সিরাজউদৌল্লাকে পরাজিত করে পূর্বভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব দ্রুত বাড়াতে থাকে
১৭৬০ :কবি ভারতচন্দ্রের মৃত্যু
১৭৬৫ :নবাব মীর-কাসিমের পরাজয়ের পরে শাহ্ আলম বাদশাহের নিকট হইতে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ কর্তৃক বাঙলা, বিহার, ওড়িশার দেওয়ানি লাভ
১৭৭২-- ১৮৫৬ :গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড ডালহৌসির শাসনকালের মধ্যে সারা ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে
১৭৭৩ : কলকাতাকে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষণা করা হয়
১৭৭৮ :হ্যালহেড্ (Nathaniel Brassey Halhed)-কৃত বাঙলা ব্যাকরণ(A Grammar of the Bengal Language)-- এখানে ইংরেজির সঙ্গে প্রথম বাংলা বিচল হরফে(moveable type) বহু উদাহরণ মুদ্রিত হয় হরফ নির্মাণ করেন চার্লস উইলকিনস্ এ ব্যাপারে তিনি পঞ্চানন কর্মকারের উপরে নির্ভর করেন পঞ্চানন কর্মকার ছেনি দিয়ে লোহা কেটে প্রথম বাংলা হরফ বানান হরফগুলি সুন্দর হয়
১৭৮২ :তিতুমিরের জন্ম চব্বিশ পরগণার হায়দরপুর গ্রামে প্রথম জীবনে দাঙ্গায় জড়ানোর জন্য কারাদণ্ড হয় মুক্তি পেয়ে মক্কা যান সেখানে ওয়াহাবি আন্দোলনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন দেশে ফিরে সেই আদর্শে কৃষকদের সংগঠিত করে জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন জমিদার নিহত হয়, গ্রেপ্তার করতে এসে দারোগাও নিহত হয় এরপরে তিতুমির নিজেকে বাদশাহ বলে ঘোষণা করেন নারকেলবেড়িয়ায় নিজ সৈন্য বাহিনীর জন্য একটি বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন আসলে বাঁশের কেল্লা গড়ে ইংরেজবাহিনীকে ঠেকানো বা নিজরাজ্য স্থাপন নিতান্ত আকাশকুসুম কল্পনা বাস্তবেও তাই ঘটেছে তিতুমিরের বাহিনীর দাপটে চব্বিশ পরগণায় এবং নদীয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হওয়ায় গভর্নর উইলিয়াম বেন্টিংক কামান বন্দুকসহ সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে তিতুমিরের বিদ্রোহ ব্যর্থ করে দেন তিতুমির নিহত হন
১৭৯৩ :আপজন্ (Upjohn) কর্তৃক প্রকাশিত 'ইংরেজি ও বাংলা বোকোবোলারি'
১৭৯৩ :চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলবৎ হয় বাংলা-বিহার-ওড়িশার জমিদারদের জমিদারিতে মালিকানা আগে ছিল পাঁচ বছর পরে আরও এক বছর বাড়ত ১৭৮৯-৯০-তে লর্ড কর্নওয়ালিস তা করে দেন দশ বছর মালিকানা-অধিকার কিন্তু রাজস্ব আদায়ের অসুবিধার জন্য পরে আইন করে তা নির্দিষ্ট খাজনার বিনিময়ে চিরস্থায়ী করে দেওয়া হয় ফলে ইংরেজরা পায় অনুগত জমিদারশ্রেণি কিন্তু জোর করে খাজনা আদায় করতে গিয়ে প্রজাপীড়ন শুরু হয় ফলে পরবর্তীকালে প্রজাপীড়ন রোধ করতে উদ্যোগ নিতে হয় জমিদারি প্রথা বিলোপের দাবি ওঠে ইংরেজ আমলেই স্বাধীনতার পরে জমিদারি প্রথা বিলোপ করা হয় [অনেকে অনুমান করেন যে, বাঙালিরা তাদের বিপুল ব্যবসা-ঐতিহ্য ছেড়ে দিয়ে ক্রমে ক্রমে ব্যবসা-বিমুখ হয়ে পড়ে এই চিরস্থায়ী নিশ্চিত আয় ও প্রজাদের উপর রাজকীয় অধিকার ফলানো এবং
বিলাসী জীবনযাপনের সুবিধার জন্য]
১৭৯৯-১৮০২ :ফরস্টার(Forster) কৃত ইংরেজি-বাংলা ও
বাংলা-ইংরেজি অভিধান
১৮০০খ্রিস্টাব্দ__
১৮০০ :কোলকাতায় 'ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ' প্রতিষ্ঠা
১৮০১ :ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপিত হলে উইলিয়াম কেরি সেখানে বাংলার অধ্যাপক নিযুক্ত হন বাংলাভাষার উন্নয়নে কেরির অবদান স্মরনীয় তিনি শ্রীরামপুরে একটি প্রেস স্থাপন করেন এবং স্থানীয় পঞ্চানন কর্মকারকে দিয়ে বাংলা হরফ নির্মাণ করিয়ে অনূদিত বাইবেল বাংলায় প্রকাশ করেন একই বছরে উইলিয়াম কেরি(William Carey) ইংরেজিতে স্বরচিত বাংলা ব্যাকরণ প্রকাশ করেন মুখ্যত কেরি সাহেবের উদ্যোগে বাংলাভাষার গদ্যযুগের সূচনা হয়
১৮০৩ :শ্রীরামপুরে মিশনারিগণ কর্তৃক কৃত্তিবাসের রামায়ণ মুদ্রণ
১৮১৭ :'হিন্দু কলেজ' প্রতিষ্ঠা
১৮১৭ :রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ সংকলিত 'বঙ্গভাষাভিধান'
১৮১৮ :প্রথম বাংলা সংবাদপত্র 'সমাচার দর্পণ' মার্শম্যান(J.C.Marshman), ব্যাপটিস্ট মিশন, শ্রীরামপুর
আর বাঙালি পরিচালিত প্রথম বাংলা সংবাদপত্র গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ও হরচন্দ্র রায় কর্তৃক প্রকাশিত --'বাঙ্গালা গেজেট' রাজা রাধাকান্ত দেব-- 'শব্দকল্প-দ্রুম' সংস্কৃত অভিধানের মুদ্রণ আরম্ভ
১৮২০ :রাজা রাধাকান্ত দেব রচিত ও প্রকাশিত 'বাঙ্গালা শিক্ষক'(বর্ণমালা ও প্রথম পাঠ)
১৮২৫ :উইলিয়াম কেরি(William Carey)-কৃত বাঙ্গালা অভিধান
১৮২৬ :রামমোহন রায় রচিত বাঙ্গালা
ব্যাকরণ(বাংলা সংস্করণ, ১৮৩৩)
১৮২৬ :হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও হিন্দু কলেজে অধ্যপকরূপে যোগ দেন বাংলার নবজাগরণের ইতিহাসে ডিরোজিও এক অতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে কলেজে অধ্যাপনায় যোগ দেন ছাত্ররাও প্রায় তাঁর সমবয়সী, কিন্তু তাঁর গভীর জ্ঞান, বিশ্লেষণী প্রতিভা, বাগ্মিতা ও সহৃদয়তা ছাত্রদের মুগ্ধ ও আবিষ্ট করে ফেলে তিনি অসম্ভব ছাত্র-সুহৃদ হয়ে দাঁড়ান তাঁর কথা ছাত্রদের কাছে অলঙ্ঘনীয় শেষ কথা হয়ে ওঠে তিনি ছাত্রদের ধর্মীয় কুসংস্কার, জাতিভেদ ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন করেন মুক্ত মনে ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ইত্যাদি আলোচনার জন্য একটি সংগঠনও তৈরি করেন তিনি ছাত্রদের যেমন সচেতন করেন তেমনি তাদের মধ্যে দেশাত্মবোধও জাগিয়ে তোলেন তিনি নিজে ছিলেন এয্ংলো-ইন্ডিয়ান তাই প্রকৃত মুক্তমন না হলে এদেশীয় ছাত্রদের মধ্যে ইংজেরদের স্বার্থবিরোধী দেশাত্মবোধ জাগাতেন না ডিরোজিওর ছাত্রদের অনেকেই পরবর্তী কালে দেশখ্যাত হন এঁরা সে কালে ‘ইয়ং বেঙ্গল’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন এঁদের আলোচনায় খ্রিস্ট ধর্ম ও ইংরেজ শাসন নিয়েও বিভিন্ন সমালোচনা হত কলেজ কর্তৃপক্ষ ভীত হয়ে এসব নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা বন্ধ করে দেন তাতে কিন্তু ছাত্রদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায় তাঁদের কাজকর্মে অভিভাবকেরাও ভীত হয়ে পড়েন শেষে ভীত হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিরোজিওকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন ডিরোজিও সে সুযোগ না দিয়ে
আগেই পদত্যাগ করেন (২৫ এপ্রিল, ১৮৩১) বিপুল উদ্দীপনা ও মুক্তমন শিক্ষার এই হয় শেষ পরিণতি পদত্যাগের কয়েক মাস পরে এই আদর্শ শিক্ষক প্রকৃতপক্ষে অনাহারে মারা যান(১৮৩১) এই অল্পবয়সী তরুণ অধ্যাপকের অভাব আর কি পূরণ হওয়া সম্ভব? কোলকাতার মল্লিক বাজারে পুরানো এক খ্রিস্টিয় কবরস্থানে তাঁর স্মৃতি বেদী বেশ অনাদরেই পড়ে আছে
১৮৩০ :ব্রাহ্মসমাজ মন্দির প্রতিষ্ঠা
১৮৩৩ :হটন()-কৃত বাঙ্গালা-ইংরেজি অভিধান রামমোহন রায়ের মৃত্যু
১৮৩৪ :রামকমল সেন-কৃত ইংরেজি-বাঙ্গালা অভিধান
১৮৩৮ :আদালতে ফারসির পরিবর্তে ইংরেজির প্রচলন
১৮৪৬ :দ্বারকানাথ ঠাকুর দ্বিতীয়বার ইংলন্ডে গিয়ে সেখানে প্রয়াত হন(১ আগস্ট) ঠাকুর পরিবারের রামলোচন নিঃসন্তান ছিলেন বলে ছোটভাই রামমণির পুত্র দ্বারকানাথকে দত্তক নেন দ্বারকানাথ শৈশবে ফিরিঙ্গি স্কুলে ইংরেজি শেখেন, যৌবনে ইংরেজ ব্যারিস্টারের কাছে আইন শেখেন তাছাড়া, আরবি, ফার্সি ভাষাও শেখেন রেশমের ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন পরে নুনের ব্যবসা, নীল, চিনি, ব্যাঙ্ক, বিমা, কয়লাখনি, জাহাজ, সংবাদপত্র প্রভৃতির ব্যবসা করে বিপুল অর্থের অধিকারী হন তাঁর নাম হয়ে যায় ‘প্রিন্স দ্বারকানাথ’ ব্যবসালব্ধ অর্থ দিয়ে তিনি নতুন নতুন জমিদারি কেনেন ১৮৪২-এ ইংলন্ডে যাবার কালে পোপের সঙ্গে দেখা করেন, লন্ডনে মহারানি ভিক্টোরিয়ার নিকট-সংস্পর্শে আসেন, দেশে ফেরার পথে ফ্রান্সের সম্রাট লুই ফিলিপের সঙ্গে দেখা করেন ১৮৪৫-এ দ্বিতীয়বার ইংলন্ডে যাবার পথে ইতালির রাজার সঙ্গে দেখা করেন দ্বারকানাথ ছিলেন নানা সমাজসেবা মূলক প্রয়াসের সঙ্গী এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি পৃষ্ঠপোষক সতীদাহ রোধ, দেশে মেডিক্যাল শিক্ষা প্রসার, সংবাদপত্রের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ইত্যাদি ব্যাপারে তিনি ছিলেন অগ্রণী বাংলার শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতির উদ্ভাসে ঠাকুর বাড়ির যে অবদান তা দ্বারকানাথের সময়েই সূচিত হয়ে প্রবাহিত হতে থাকে
১৮৪৭ :ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-কৃত ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’
১৮৫০ :শ্যামাচরণ সরকার-রচিত বাঙ্গালা ব্যাকরণ(ইংরেজিতে)
১৮৫৬ :বিদ্যাসাগরের নিরলস আন্দোলনের ফলে
বিধবা বিবাহ আইনসিদ্ধ হয়
১৮৫৭ :কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা
১৮৫৮ :প্যারীচাঁদ মিত্র(টেকচাঁদ ঠাকুর) রচিত ‘আলালের ঘরের দুলাল’(উপন্যাস)
১৮৬১ :‘মেঘনাদবধ কাব্য’ মধুসূদন দত্ত
১৮৬৩ :‘হুতোম পেঁচার নক্শা’ -- কালীপ্রসন্ন সিংহ__
১৮৬৫ :‘দুর্গেশনন্দিনী’ -- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
লিখিত প্রথম উপন্যাস
১৮৬৭ :কোলকাতা-দিল্লি রেল সংযোগ স্থাপন
১৮৬৯ :কেশবচন্দ্র সেন ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ নামে ঈশ্বর চিন্তার এক নতুন ধরনের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এর আগে তিনি ১৮৫৭-তে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন ভারত সংস্কৃতির প্রকৃত ঐক্য গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন
সর্বভারতীয় ব্যক্তিত্ব মুম্বই শহরে তার অনুসারী সংগঠন, ও তামিলনাড়ুতে ২৯টি ব্রাহ্মসমাজ শাখা গড়ে ওঠে
১৮৭২ :বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা প্রকাশ
১৮৭২-৭৯ :বীমস্(Beams)-কৃত আধুনিক আর্যভাষাগুলির
তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৭৭ :রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর-কৃত তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৮০ :হ্যরন্লে (Hoernle)-কৃত আধুনিক আর্যভাষার তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৮৫ :জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় Womesh Chandra Bonerje(W C Bonerjee) ১৯০২ খ্রিঃ স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে ইংলন্ড যাত্রা করেন
১৮৯০ :গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন তিনিই ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রথম ভারতীয় ভাইস চ্যান্সেলর
১৮৯৩ :বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ প্রতিষ্ঠা
১৮৯৫-৬ :গ্রিয়ার্সন (Grierson)-কৃত আধুনিক আর্যভাষার তুলনাত্মক ব্যাকরণের প্রারম্ভ
১৯০০খ্রিস্টাব্দ__
প্রথমার্ধ :এন্টনি কবিয়াল জাতিতে পোর্তুগিজ, খ্রিস্টান বাঙালির সংস্কৃতি ও হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন কবিয়াল রূপে খ্যাতি অর্জন করেন কথিত আছে যে মধ্য কোলকাতার বৌবাজারে নাকি তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালী, ফিরিঙ্গি কালী নামে খ্যাত
১৯০২ :অনুশীশন সমিতি -- বিপ্লবী রাজনৈতিক সংগঠন কোলকাতায় গঠিত হয় এধরনের বিভিন্ন সংগঠন বাংলায় গড়ে ওঠে, অনুশীশন সমিতির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল
১৯০৩ :গ্রিয়ার্সন (Grierson)-কৃত Linguistic Survey of India-র পত্তন, বাঙ্গালা ভাষা-বিষয়ক প্রথম খণ্ড
১৯০৫ :বঙ্গ-ভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলন লর্ড কার্জনের শাসনকালে
১৯০৮ :ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশিষ্ট বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত এবং সত্যেন বসুর মৃত্যু দণ্ড আলিপুর বোমা মামলায় ধৃত হয়ে জেলের ভিতরেই রাজসাক্ষী নরেন গোঁসাইকে হত্যার অভিযোগ ছিল
১৯০৮ :বি.এ. পরীক্ষা অবধি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য আবশ্যিক পাঠ্য-বিষয়-রূপে নির্ধারিত
১৯০৮ :ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভারতের প্রথম শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়(১১ আগস্ট) অত্যাচারী ইংরেজ রাজকর্মচারী কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে গিয়ে তার ঘোড়ার গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন(৩০ এপ্রিল, ১৯০৮), কিন্তু গাড়িতে সে দিন অন্য লোক ছিলেন, ফলে উদ্দশ্য ব্যর্থ হয় অন্য লোক মারা যায় পরে ক্ষুদিরাম ধরা পড়েন, সহযোগী প্রফুল্ল চাকি ধরা পড়ার আগেই নিজের রিভলবারের গুলিতে আত্মহত্যা করতে সমর্থ হন(১ মে, ১৯০৮)
১৯১১ :বঙ্গ-ভঙ্গ রদ ও ভারতের রাজধানী কোলকাতার পরিবর্তে দিল্লি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা (১২ ডিসেম্বর)
১৯১২ :দিল্লি দরবারের ঘোষণা অনুসারে ভঙ্গ বঙ্গ আবার যুক্ত হয়
(১ জানুয়ারি)
১৯১৩ :সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেলেন(১৩ নভেম্বর)[সুইডিশ একাডেমি প্রদত্ত ইউরোপের বাইরে এটাই প্রথম]
১৯১৬ :হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক ‘চর্য্যাপদ’(বৌদ্ধগান ও দোহা) প্রকাশ
১৯১৭ :বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ কর্তৃক ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ প্রকাশ
১৯১৭ :জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের বাঙ্গালা অভিধান,(২য় সংস্করণ, ১৯৩৭)
১৯১৯ :পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরের পূব দিকে অবস্থিত জালিয়ানওয়ালাবাগ উদ্যানে একটি সভায় ইংরেজ জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে সৈন্যরা নিরীহ মানুষের উপরে বেপরোয়া গুলি চালিয়ে ৩৭৯ জনকে হত্যা করে, আহত হন ১২০০ মানুষ এই নারকীয় ঘটনায় সারাদেশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ঘটনার প্রতিবাদে 'নাইট' খেতাব ত্যাগ করেন ব্রিটিশ সরকারই এই সর্বোচ্চ-সম্মানে তাঁকে ভূষিত করেছিল সম্মান জানাবার জন্য
১৯২১ :প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও দয়ারাম সাহানির সহযোগিতায় জন মার্শালের নেতৃত্বে মহেঞ্জোদরো ও হরপ্পার অতি প্রাচীন সভ্যতার সন্ধান পাওয়া যায়
১৯২৫ :মাত্র ৫৫বছর বয়সে বিশিষ্ট জননায়ক দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ প্রয়াত হন তিনি স্বরাজ্যদল গঠন করে দেশব্যাপী আলোড়ন তোলেন এবং ১৯২৩ খ্রিঃ নির্বাচনে বিপুল সাফল্য লাভ করেন গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলেনর আহ্বানে তিনি তাঁর বিপুল আইন ব্যবসা ছেড়ে দেশের কাজে নেমে পড়েন কথিত আছে যে বিলেত থেকে তাঁর পোষাক ধুয়ে আনা হত জীবিকা ত্যাগ করে কষ্টে জীবন অতিবাহিত করেন, স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে দেশের লোক তাঁর নাম দেন 'দেশবন্ধু' কোলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর সুউচ্চ স্মৃতি সৌধ আছে
১৯৪০ :কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার মাধ্যমে প্রবেশিকা
পরীক্ষা-গ্রহণ
১৯৪১ :রবীন্দ্র তিরোধান
১৯৪৭ :ভারতের স্বধীনতা লাভ(১৫ আগস্ট), এবং বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা
১৯৪৯ :ভারত সরকারের সঙ্গে কোচবিহার মহারাজের চুক্তি অনুসারে কোচবিহার ভারতের অঙ্গীভূত হয়(১২ সেপ্টেম্বর) কোচবিহারের রাজভাষা ছিল বাংলা এখন কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা
১৯৫২ :পূর্ব পাকিস্তানের(বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ) ঢাকায় বাংলা ভাষার দাবিতে ভাষা আন্দোলন(২১শে ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার) বহু আহত ও নিহত ভাষাশহীদ হন-- (১)আবদুল জব্বার, (২)রফিক উদ্দিন আহমেদ, (৩)আবুল বরকত, (৪)সালাউদ্দিন, (৫)নাম-না-জানা শহীদ
২২শে ফেব্রুয়ারি, (৬)সফিউর রহমান, (৭)আউয়াল,
(৮+৯)নাম-না-জানা শহীদ
১৯৬১ :ভারতের শিলচর অসমে বাংলা ভাষার দাবিতে ভাষা আন্দোলন(১৯মে, শুক্রবার) ভাষাশহীদ হন -- (১)কমলা ভট্টাচার্য,(২)বীরেন্দ্রনাথ সূত্রধর, (৩)চণ্ডীচরণ সূত্রধর, (৪)শচীন পাল, (৫)কুমুদ দাস, (৬)কানাইলাল নিয়োগী, (৭)সুনীল সরকার, (৮)সত্যেন্দ্র দেব, (৯)তরণী দেবনাথ, (১০)হিতেশ বিশ্বাস, (১১)সুকোমল পুরকায়স্থ
১৯৭১ :পূর্ব-পাকিস্তান বিলোপপূর্ববঙ্গে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা(১৬ডিসেম্বর)
২০০০০খ্রিস্টাব্দ
সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতে হবেবিনামূল্যে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে
উন্নত বাংলা ফন্ট ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’
https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip
অহনলিপি-বাংলা১৪
ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং (AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)
(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)
on
internet(Mozilla Firefox)
(top left)
Tools
Options > contents
Fonts & Colors
Default font:=AhanLipi-Bangla14
Advanced...
Fonts for:
=Bengali
Proportional
= Sans Serif, Size=20
Serif=AhanLipi-Bangla14
Sans
Serif=AhanLipi-Bangla14
Monospace=AhanLipi-Bangla14, Size=20
--OK
Languages
Choose your preferred Language for
displaying pages
Choose
Languages in order of preference
Bengali[bn]
--OK
--OK
এবার ইন্টারনেট খুললে অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্টে
সকলকিছু দেখা যাবে এবং সকল কিছু লেখাও
যাবে
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
===========================
বাংলার ইতিহাস
কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা
ইতিহাস অনুসন্ধান চলতেই থাকে, তাই তার ব্যাখ্যা বিবরণ বাড়তেই
থাকে বাংলার ইতিহাসের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না
গ্রন্থ সহায়তা:--
১)বাঙ্গালা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা-- শ্রীসুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
(ক.বি.-১৯৭৪)
২)ইতিহাস অভিধান(ভারত) ২য় সং ১৯৮২ -- যোগনাথ মুখোপাধ্যায়
৩)বঙ্গঅভিধান ১ম সং ১৯৯৯ -- যোগনাথ মুখোপাধ্যায়
নোট: প্রথম শতাব্দী =১ থেকে ১০০,
দ্বিতীয় শতাব্দী=১০১ থেকে ২০০খ্রিস্টাব্দ অবধি
তৃতীয় শতাব্দী=২০১-৩০০খ্রিঃ
যে শত-বছরে শতক শেষ হয় সেটাই সেই শতাব্দী
খ্রিস্টপূর্বাব্দ
৩০০ আনুমানিক : মৌর্যবিজয় বাংলাদেশে আর্য ভাষা সংস্কৃতির প্রসার
০০০খ্রিস্টাব্দ__
১০০খ্রিস্টাব্দ__
২০০খ্রিস্টাব্দ__
৩০০খ্রিস্টাব্দ__
৩৫০ :বঙ্গদেশে গুপ্তসম্রাটগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশে উত্তর ভারতের সভ্যতার সভ্যতার প্রসার
৩০০-৪০০ এবং তার পরবর্তী :পশ্চিমবঙ্গের ২৪পরগনা জেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক স্থান চন্দ্রকেতু গড় গুপ্তযুগের একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এখানে পাওয়া গেছে ৩০০-৪০০ এবং তার পরবর্তী কালেরও অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শনও এখানে পাওয়া গেছে
৪০০খ্রিস্টাব্দ__
৫০০খ্রিস্টাব্দ__
৬০০খ্রিস্টাব্দ__
ষষ্ঠ শতকের শেষ :গুপ্ত সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়লে বঙ্গদেশে বঙ্গ ও গৌড় নামে দুটি রাজ্য গড়ে ওঠে বঙ্গ গঠিত হয় __পূর্ববঙ্গ, দক্ষিণ বঙ্গ ও পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ অংশ নিয়ে আর গৌড় গঠিত হয় __উত্তরবঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশ নিয়ে আনুমানিক ষষ্ঠ শতকের শেষ ভাগে শশাঙ্ক নামে এক বাঙালি সামন্ত রাজা স্বাধীন গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে গৌড় রাজ্যে অরাজকতা দেখা দেয় এই দুরবস্থা চলতে থাকার শতাব্দীকাল পরে বঙ্গদেশের জনগণ গোপাল নামে এক প্রতিপত্তিশালী সামন্তকে বঙ্গদেশের রাজা নির্বাচিত করেন(আনুমানিক ৭৫০ খ্রিঃ) এটাই সম্ভবত প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের
প্রথম ধাপ
৭০০খ্রিস্টাব্দ__
সপ্তম শতক :চিনা পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং তাম্রলিপ্ত বন্দর দিয়ে স্বদেশ যাত্রা করেন পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত তাম্রলিপ্ত, বর্তমানে তমলুক নামে পরিচিত প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত ছিল একটি বড় বন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র এই বন্দর দিয়ে পূর্ব-ভারতীয় দ্বীপময় দেশগুলির সঙ্গে বঙ্গেদেশর বাণিজ্য চলত, বঙ্গের সপ্তডিঙা মধুকরের যে কল্প-কাহিনি প্রচলিত আছে তার ঐতিহ্যবাহী বঙ্গের এসকল প্রচীন নদীবন্দরগুলি কালক্রমে নদী সরে গেছে, মরে গেছে, বন্দরও ক্রমে ক্রমে বিলুপ্ত হয়েছে কোলকাতা এবং নবীন হলদিয়া বন্দর ক্রমে যে সংকটের মুখে পড়ছে
সপ্তম শতক :সম্রাট হর্ষবর্ধনের সময়কালে কর্ণসুবর্ণ গৌড়রাজ শশাঙ্কের রাজধানী ছিল এটি বাংলার প্রাচীন সমৃদ্ধ নগরী পরে গৌড় রাজ্য কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়ে গেলে কর্ণসুবর্ণ নগরীকে কেন্দ্র করে একটি স্বাধীন রাজ্য গড়ে ওঠে কর্ণসুবর্ণ নগরীর সঠিক অবস্থান এখনও নির্ণীত হয়নি অবশ্য অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে স্থানটি ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী রাঙামাটি গ্রাম এলাকা চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর বিবরণীতে কর্ণসুবর্ণ নগরীর সমৃদ্ধির বর্ণনা আছে
৭৭০-৮১০ :ধর্মপাল__ পালবংশীয় রাজা গোপালের উত্তরাধিকারীধর্মপালের পরাক্রমে পালরাজ্য একটি সাম্রাজ্যে পরিণত হয় ধর্মপালই পালবংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ক্ষুদ্র একটি রাজ্যকে তিনি বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত করেন তিনি ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মানুরাগী কিন্তু হিন্দুদের প্রতিও তিনি উদার ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় মগধে বিক্রমশীলা মহাবিহার-বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয় এছাড়া আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় তিনি স্থাপন করেন__ একটি হল ওদন্তপুরী মহাবিহার, অন্যটি সোমপুরী মহাবিহার ইতিহাসখ্যাত অতীশ দীপঙ্কর ওদন্তপুরী মহাবিহারে অধ্যয়ন করে ‘শ্রীজ্ঞান’ উপাধি লাভ করেন সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজশাহি জেলায় সোমপুরী মহাবিহারের ভগ্নাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে
৭৪০ আনুমানিক :পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠা
৮০০খ্রিস্টাব্দ__
৯০০খ্রিস্টাব্দ__
১,০০০খ্রিস্টাব্দ__
১০৩৮ আনুমানিক :দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ-- বাংলায় বৌদ্ধ আচার্য
১১০০খ্রিস্টাব্দ__
১১৫০ আনুমানিক :মহারাজ বল্লাল সেন
১১৮০ আনুমানিক :কবি জয়দেব;মহারাজ লক্ষ্মণ সেন
১২০০খ্রিস্টাব্দ__
১২০০ আনুমানিক :বিদেশীয় মুসলমান তুর্কীগণ কর্তৃক বঙ্গবিজয়ের সূত্রপাত
১৩০০খ্রিস্টাব্দ__
১৪০০খ্রিস্টাব্দ__
১৪০০ আনুমানিক :বড়ু চণ্ডীদাসের জীবনকাল শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন- রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ
১৪০০ আনুমানিক :মৈথিল কবি বিদ্যাপতির জীবনকাল
১৪১৮ আনুমানিক :দনুজমর্দনদেব-- রাজা কংস
১৪২০ আনুমানিক :রামায়ণের কবি কৃত্তিবাসের জীবনকাল
১৪৬৩-১৫১৫ :ত্রিপুরার রাজা হন ধন্যমাণিক্য, তাঁর সঙ্গে বঙ্গদেশের সুলতান হুসেন শাহের সঙ্গে বিরোধ হয় সেই সময়ে ত্রিপুরা রাজ্য সবচেয়ে বিস্তার লাভ করে পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটির সূচনাকালের ইতিহাস অস্পষ্ট গৌড়রাজের সহায়তায় রত্নফা নামে রাজা সম্ভবত সর্বপ্রথম ত্রিপুরা শাসন করেন ত্রিপুরার রাজাদের উপাধি হয় মাণিক্য বাংলার নবাব সুজাউদ্দিনের শাসনকালে ত্রিপুরা পৃথক রাজ্য থকলেও ত্রিপুরার স্বাধীনতা খর্ব হয় সে সময়ে ত্রিপুরার নাম বদলে রাখা হয় রোসেনাবাদ নবাব আলিবর্দি খাঁ ত্রিপুরা জয় করেন পরে পলাশির যুদ্ধে বাংলার নবাব(সিরাজউদৌল্লা) পরাজিত হলে ত্রিপুরা আবার স্বতন্ত্র রাজ্যরূপে জেগে ওঠে পরবর্তীকালে ত্রিপুরা ইংরেজের বশ্যতা স্বীকার করলেও কিছুটা স্বাধীন সত্ত্বাও বজায় রাখতে পারে বর্তমানে ত্রিপুরা ভারতের একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য(১৯৭২) জনসংখ্যায় বাঙালিরা প্রধান, রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা, সেখানে অন্য একটি প্রধান ভাষা হল ত্রিপুরী/ কক্বরক এখানে গড় স্বাক্ষরতার হার ৭৩%,
যা অন্যদের চেয়ে বেশি
১৪৮০ আনুমানিক :মালাধর বসু গুণরাজ খাঁ
১৪৮৬ :গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক চৈতন্যদেবের জন্ম ফাল্গুনীদোল-পূর্ণিমায় নবদ্বীপ ধামে সে দিন ছিল পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ পিতা জগন্নাথ মিশ্র, মাতা শচীদেবী বাবা তাঁর নাম দেন বিশ্বম্ভর তাঁকে অনেক নামে ডাকা হত __নিমাই, গৌরাঙ্গ, মহাপ্রভু, শ্রীকৈষ্ণচৈতন্য পিতা জগন্নাথ মিশ্র ও মাতা শচীদেবীর তিনি দ্বিতীয় পুত্র প্রথম পুত্র বিশ্বরূপ চৈতন্যদেব তথা নিমাই ছিলেন অসাধারণ মেধাবী এবং পণ্ডিত পাণ্ডিত্য অর্জন করে নবদ্বীপেই টোল খুলে অধ্যাপনা শুরু করেন ১৬ বছর বয়সে বিবাহ হয় লক্ষ্মীপ্রিয়ার সঙ্গে তিনি সর্পদংশনে মারা যান, তারপরে তাঁর মা তাঁর ভাবান্তর দেখে বিয়ে দেন সুন্দরী বিষ্ণুপ্রিয়ার সঙ্গে বিহারের গয়ায় গিয়ে পিতৃকৃত্য সম্পন্ন করতে গিয়ে বিষ্ণুর পাদপদ্ম দর্শন করে আকূল হয়ে পড়েন দীক্ষা নিয়ে ফিরে আসেন পরে মায়ের অনুমতি নিয়েই নিমাই পণ্ডিত সন্ন্যাস নেন ১৩৪১ শকাব্দের মাঘ মাসে (১৫১০ ইং) ২৪বছর বয়সে কাটোয়ায় গিয়ে সন্ন্যাসে দীক্ষা নেন, তখন নাম হয় শ্রীকৈষ্ণচৈতন্য এর পরে মানুষ ব্যাপকভাবে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করতে থাকেন তাঁর তিরোধান নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না ১৪৫৫ শকাব্দে আষাঢ় মাসে (জুলাই ১৫৩৩) তাঁর জীবনাবসান হয়
১৪৮৬-১৫৩৪[৪৯] :চৈতন্যদেবের জীবনকাল
১৪৯২ আনুমানিক :বিপ্রদাস চক্রবর্তী-- মনসামঙ্গল
১৪৯৩ আনুমানিক :বিজয় গুপ্ত -- পদ্মপুরাণ
১৪৯৩-১৫১৯ :বাংলার সুলতান হোসেন শাহ
১৫০০খ্রিস্টাব্দ__
১৫১৭ :পোর্তুগিজদের বঙ্গে আগমন
১৫২৬ :উত্তর হিন্দুস্থানে বাবর কর্তৃক মোগল সাম্রাজ্য স্থাপন
১৫৪০ আনুমানিক :বৃন্দাবনে বাঙালি বৈষ্ণব-গোস্বামীগণের প্রতিষ্ঠা
১৫৭৫ :বঙ্গে মোগল অধিকার
১৫৮০ আনুমানিক :কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম কৃষ্ণদাস কবিরাজ
১৬০০খ্রিস্টাব্দ__
১৬০০ :ভারত ও পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ইংন্ডের একদল বণিক ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে ৩১ ডিসেম্বর রানি এলিজাবেথের সনন্দ বলে উক্ত কোম্পানি উত্তমাশা অন্তরীপ থেকে সমগ্র পূর্বাঞ্চালে বাণিজ্যের একচেটিয়া অধিকার লাভ করে তারা ১৬০৮-এ মোগল সম্রাট জাহাঙ্গিরের শাসনকালে সুরাটে প্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি পায় পরে অন্যান্য স্থান সহ হুগলিতে বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়
১৬০০ আনুমানিক :কাশীরাম দাসকোলকাতায় আর্মানিগণ
১৬৪৫-৬০ :আরাকানরাজের সভাকবি আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ ও অন্যান্য কাব্য রচনার কাল
১৬৫০ আনুমানিক :চট্টল=চট্টগ্রামে আলাওল প্রমুখ মুসলমান কবিগণ
১৬৫১ :ইংরেজদের প্রথম বঙ্গে আগমন
১৬৫৩ :পূর্বভারতে চুঁচুড়ায় ওলন্দাজদের(হল্যান্ডিজ) প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপিত হয় সেখানে তারা গুস্তাফাস নামে একটি দুর্গ স্থাপন করে পূর্বভারত থেকে তাদের রপ্তানির পণ্য ছিল তাঁতের কাপড়,
সোরা, আফিম ইত্যাদি
১৬৯০ :জব চার্নক হুগলি নদীর তীরবর্তী সুতানুটি গ্রামে একটি
কারখানা বানান
১৬৯০ :ঔরঙ্গজেবের ফরমান বলে জোব চার্নক __কোলকাতা, সুতানুটি, গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে কোলকাতা শহরের পত্তন করেন(২৪ আগস্ট) কোলকাতা থাকার কালে জোব চার্নক এখানকার বহু আচার-বিধি রপ্ত করেন তিনি এক হিন্দু বিধবাকে সহমরণ থেকে বাঁচিয়ে নিজে বিবাহ করেন ১৬৫৬ খ্রিঃ তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীরূপে জীবন শুরু করেন তাঁর জীবনাবসান হয় তাঁর গড়া এই শহরেই(১০ জানুয়ারি, ১৬৯৪) সে স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে কোলকাতার বি.বা.দী বাগ অঞ্চলে কোলকাতা নামের আড়ালে অন্য দুটি গ্রাম তথা সুতানুটি, গোবিন্দপুর তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে
১৬৯১ :কোলকাতায় ইংরেজদের বসবাস
১৬৯৮ :মোগল সম্রাট ঔরংজেবের অনুমতি অনুসারে চার্নক সুতানুটিসহ কোলকাতা ও গোবিন্দপুর নামক পল্লী নিয়ে
কোলকাতা নগরীর পত্তন করেন
১৭০০খ্রিস্টাব্দ__
১৭০০ :মাণিক গাঙ্গুলি-- ধর্মমঙ্গল
১৭১১ :ঘনরাম-- ধর্মমঙ্গল
১৭১৫ :মোগল দরবার থেকে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’কে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় সেমুদ্রা মোগল সাম্রাজ্যেও চালু হয়
১৭৪৩ :বাংলা ভাষায় প্রথম মুদ্রিত পুস্তক রোমান অক্ষরে পোর্তুগালের রাজধানী লিস্বনে(Lisbon Lisboa) ছাপা পোর্তুগিজ পাদ্রী
আস্সুম্প্সাওঁ এর বই
১৭৫০ :রামপ্রসাদ ও ভারতচন্দ্রের জীবনকাল
১৭৫৬ :অন্ধকূপ হত্যা --সিরাজউদৌল্লা কোলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করলে ইংরেজরা কিছুক্ষণ বাধা দেওয়ার পরে সেদুর্গ ত্যাগ করে ফলতায় গিয়ে আশ্রয় নেয়(২০ জুন) ওই সময়ে আহত ইংরেজ সৈন্যদের দুর্গের একটি কক্ষে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রাতে আহতদের কয়েকজন মারা গেলে হলওয়েল নামে এক ইংরেজ রাজকর্মচারী অন্ধকূপ হত্যার কল্পিত কাহিনী প্রচার করে সিরাজের কুৎসা প্রচারের জন্য
১৭৫৬ :নবাব সিরাজউদৌল্লা কোলকাতা দখল করে নেবার পরে(২০ জুন) লর্ড ক্লাইভ এবং ওয়াটসন তামিলনাড়ু থেকে জাহাজযোগে সৈন্যবাহিনী নিয়ে আসেন ও কোলকাতা পুর্দখল করেন(২জানুয়ারি,১৭৫৭) দুমাস পরে ফরাসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চন্দবনগর দখল করেন ক্লাইভ প্রথমে ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কেরানি, পরে ফ্রান্স-ইংলন্ড যুদ্ধ শুরু হলে সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন নিজের যোগ্যতায় পরে উঁচু পদ পান চন্দননগর দখল করার পরে সিরাজউদৌল্লাকে উৎখাত করার জন্য সিরাজের পরিবারের কয়েকজন ও মীরজাফর, উমিচাঁদ, জগৎ শেঠ প্রমুখদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেন চুক্তি মতো কাজ হয় ও নদীয়ার পলাশির প্রান্তরে সিরাজউদৌল্লার সঙ্গে মেকি যুদ্ধ হয় সিরাজউদৌল্লা পরাজিত হয়ে পালাবার কালে ধরা পড়ে নিহত হন চুক্তি মতো মীরজাফর নবাব হন এবং ক্লাইভ নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা ও চব্বিশ পরগনার জায়গিরদারি লাভ করেন জায়গির থেকে ক্লাইভের বছরে তিন লক্ষ টাকা আয় হত পরে ১৭৬০-এ ক্লাইভ দেশে ফিরে যান এ দিকে তার অভাবে ইংরেজরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আবার ক্লাইভের ডাক পড়ে
ক্লাইভ এ দেশে আবার ফিরে আসেন ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে এবং ইংরেজ সরকারের গভর্নর নিযুক্ত হন তিনি তখন দিল্লির বাদশাহ শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করেন(১৭৬৫, আগস্ট ১২) ইংরেজরা তখনই বাংলা-বিহার-ওড়িশার প্রকৃত শাসন ক্ষমতা লাভ করে, নবাবের নামে মাত্র অস্তিত্ব থাকে
ক্লাইভ সে বছরই(১৭৬৫) স্বদেশে ইংলন্ডে ফিরে যান কিন্তু এবার তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অত্যাচার অনাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠল সে সব অভিযোগের ও বিচারের অসম্মান থেকে রেহাই পেতে লর্ড ক্লাইভ আত্মহত্যা করেন(২২ নভেম্বর, ১৭৭৪)
১৭৬৫ :লর্ড ক্লাইভকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইংলন্ড থেকে দ্বিতীয়বার বাংলা তথা ভারতে ফিরিয়ে আনে তাঁরই তৎপরতায় দিল্লির বাদশাহের কাছে দরবার করে কোম্পানি বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করে, ফলে পূর্ব ভারতের এই অঞ্চলে যে শাসন-ব্যবস্থা চালু হয় তা দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত নবাবের হাতে থাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব, আর রাজস্ব আদায় ও ব্যয়ের পূর্ণ কর্তৃত্ব পায় কোম্পানি এতে বাংলার নবাব আসলে ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে আর এই সুযোগে কোম্পানির লোকেরা খাজনা আদায়ের নামে অবাধ লুণ্ঠন ও অত্যাচার শুরু করে দেয় ১৭৭০-এ(বাংলা ১১৭৬) অনাবৃষ্টি হয়, ফসল ফলে না দেশে দেখা দেয় চরম বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ কয়েক লক্ষ মানুষ না খতে পেয়ে মারা যান এটাই ইতিহাসখ্যাত ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এই চরম বিপর্যয়ের জন্য অনাবৃষ্টি যতটা দায়ী তার চেয়ে ইংরেজ অনেক বেশি দায়ী, প্রধানভাবে দায়ী
১৭৭০ :বঙ্গাব্দের হিসেবে ১১৭৬ বঙ্গাব্দ বঙ্গ বাসীর জীবনে চরম বিপর্যয়ের বছর এটাই ইতিহাসখ্যাত ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ১৭৬৯ ছিল কার্টিয়ারের গভর্নর নিযুক্ত হবার বছর তার শাসনকালে বাংলায় সর্বনাশা দুর্ভিক্ষ হয় ক্লাইভের আমল থেকে নবাব ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বৈত শাসন শুরু হয়(১৭৬৫, আগস্ট ১২) ফলে কোম্পানির আমলা ও অনুচরদের অবাধ লুণ্ঠনও শুরু হয় প্রজাদের দুর্দশার শেষ থাকে না ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ তথা বাংলা ১১৭৬ সনে অনাবৃষ্টি হয়, জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয় কিন্তু কোম্পানির কর্মচারিদের শোষণ তবু অবাধে চলতে থাকে, নবাব তো ঠুঁটো আর কোম্পানি নির্দয় ফলে গ্রাম বাংলা শ্মশানে পরিণত হয় পথেঘাটে নারী-পুরষের অগণিত মৃতদেহ পড়ে থাকে না-খেতে পেয়ে, অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে মৃতের মিছিল বয়ে যায় কুকুর-শিয়ালে মানুষের দেহ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় খাদ্য তো দূরের কথা ভিক্ষে করে একটু ফ্যানও পাওয়া যেত না চারিদিকে কাতর আর্তনাদ “একটু ফ্যান দাও, একটু ফ্যান দাও” সে এক অতি ভয়াবহ দিন গেছে বাংলার বুকে এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বাংলার ইতিহাসে এক অতি বিপর্যয়ের বছর, যার জন্য অনাবৃষ্টি যতটা দায়ী তার চেয়ে ইংরেজ অনেক বেশি দায়ী, প্রধানভাবে দায়ী [আজও যে শিল্প না গড়ে চাষের উপরে নির্ভর করে থাকতে চাওয়া হচ্ছে, তার পরিণতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে]
১৭৫৭ :পলাশীর যুদ্ধ বাংলার নবাব সিরাজউদৌল্লাকে পরাজিত করে পূর্বভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব দ্রুত বাড়াতে থাকে
১৭৬০ :কবি ভারতচন্দ্রের মৃত্যু
১৭৬৫ :নবাব মীর-কাসিমের পরাজয়ের পরে শাহ্ আলম বাদশাহের নিকট হইতে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ কর্তৃক বাঙলা, বিহার, ওড়িশার দেওয়ানি লাভ
১৭৭২-- ১৮৫৬ :গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড ডালহৌসির শাসনকালের মধ্যে সারা ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে
১৭৭৩ : কলকাতাকে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষণা করা হয়
১৭৭৮ :হ্যালহেড্ (Nathaniel Brassey Halhed)-কৃত বাঙলা ব্যাকরণ(A Grammar of the Bengal Language)-- এখানে ইংরেজির সঙ্গে প্রথম বাংলা বিচল হরফে(moveable type) বহু উদাহরণ মুদ্রিত হয় হরফ নির্মাণ করেন চার্লস উইলকিনস্ এ ব্যাপারে তিনি পঞ্চানন কর্মকারের উপরে নির্ভর করেন পঞ্চানন কর্মকার ছেনি দিয়ে লোহা কেটে প্রথম বাংলা হরফ বানান হরফগুলি সুন্দর হয়
১৭৮২ :তিতুমিরের জন্ম চব্বিশ পরগণার হায়দরপুর গ্রামে প্রথম জীবনে দাঙ্গায় জড়ানোর জন্য কারাদণ্ড হয় মুক্তি পেয়ে মক্কা যান সেখানে ওয়াহাবি আন্দোলনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন দেশে ফিরে সেই আদর্শে কৃষকদের সংগঠিত করে জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন জমিদার নিহত হয়, গ্রেপ্তার করতে এসে দারোগাও নিহত হয় এরপরে তিতুমির নিজেকে বাদশাহ বলে ঘোষণা করেন নারকেলবেড়িয়ায় নিজ সৈন্য বাহিনীর জন্য একটি বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন আসলে বাঁশের কেল্লা গড়ে ইংরেজবাহিনীকে ঠেকানো বা নিজরাজ্য স্থাপন নিতান্ত আকাশকুসুম কল্পনা বাস্তবেও তাই ঘটেছে তিতুমিরের বাহিনীর দাপটে চব্বিশ পরগণায় এবং নদীয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হওয়ায় গভর্নর উইলিয়াম বেন্টিংক কামান বন্দুকসহ সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে তিতুমিরের বিদ্রোহ ব্যর্থ করে দেন তিতুমির নিহত হন
১৭৯৩ :আপজন্ (Upjohn) কর্তৃক প্রকাশিত 'ইংরেজি ও বাংলা বোকোবোলারি'
১৭৯৩ :চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলবৎ হয় বাংলা-বিহার-ওড়িশার জমিদারদের জমিদারিতে মালিকানা আগে ছিল পাঁচ বছর পরে আরও এক বছর বাড়ত ১৭৮৯-৯০-তে লর্ড কর্নওয়ালিস তা করে দেন দশ বছর মালিকানা-অধিকার কিন্তু রাজস্ব আদায়ের অসুবিধার জন্য পরে আইন করে তা নির্দিষ্ট খাজনার বিনিময়ে চিরস্থায়ী করে দেওয়া হয় ফলে ইংরেজরা পায় অনুগত জমিদারশ্রেণি কিন্তু জোর করে খাজনা আদায় করতে গিয়ে প্রজাপীড়ন শুরু হয় ফলে পরবর্তীকালে প্রজাপীড়ন রোধ করতে উদ্যোগ নিতে হয় জমিদারি প্রথা বিলোপের দাবি ওঠে ইংরেজ আমলেই স্বাধীনতার পরে জমিদারি প্রথা বিলোপ করা হয় [অনেকে অনুমান করেন যে, বাঙালিরা তাদের বিপুল ব্যবসা-ঐতিহ্য ছেড়ে দিয়ে ক্রমে ক্রমে ব্যবসা-বিমুখ হয়ে পড়ে এই চিরস্থায়ী নিশ্চিত আয় ও প্রজাদের উপর রাজকীয় অধিকার ফলানো এবং
বিলাসী জীবনযাপনের সুবিধার জন্য]
১৭৯৯-১৮০২ :ফরস্টার(Forster) কৃত ইংরেজি-বাংলা ও
বাংলা-ইংরেজি অভিধান
১৮০০খ্রিস্টাব্দ__
১৮০০ :কোলকাতায় 'ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ' প্রতিষ্ঠা
১৮০১ :ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপিত হলে উইলিয়াম কেরি সেখানে বাংলার অধ্যাপক নিযুক্ত হন বাংলাভাষার উন্নয়নে কেরির অবদান স্মরনীয় তিনি শ্রীরামপুরে একটি প্রেস স্থাপন করেন এবং স্থানীয় পঞ্চানন কর্মকারকে দিয়ে বাংলা হরফ নির্মাণ করিয়ে অনূদিত বাইবেল বাংলায় প্রকাশ করেন একই বছরে উইলিয়াম কেরি(William Carey) ইংরেজিতে স্বরচিত বাংলা ব্যাকরণ প্রকাশ করেন মুখ্যত কেরি সাহেবের উদ্যোগে বাংলাভাষার গদ্যযুগের সূচনা হয়
১৮০৩ :শ্রীরামপুরে মিশনারিগণ কর্তৃক কৃত্তিবাসের রামায়ণ মুদ্রণ
১৮১৭ :'হিন্দু কলেজ' প্রতিষ্ঠা
১৮১৭ :রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ সংকলিত 'বঙ্গভাষাভিধান'
১৮১৮ :প্রথম বাংলা সংবাদপত্র 'সমাচার দর্পণ' মার্শম্যান(J.C.Marshman), ব্যাপটিস্ট মিশন, শ্রীরামপুর
আর বাঙালি পরিচালিত প্রথম বাংলা সংবাদপত্র গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ও হরচন্দ্র রায় কর্তৃক প্রকাশিত --'বাঙ্গালা গেজেট' রাজা রাধাকান্ত দেব-- 'শব্দকল্প-দ্রুম' সংস্কৃত অভিধানের মুদ্রণ আরম্ভ
১৮২০ :রাজা রাধাকান্ত দেব রচিত ও প্রকাশিত 'বাঙ্গালা শিক্ষক'(বর্ণমালা ও প্রথম পাঠ)
১৮২৫ :উইলিয়াম কেরি(William Carey)-কৃত বাঙ্গালা অভিধান
১৮২৬ :রামমোহন রায় রচিত বাঙ্গালা
ব্যাকরণ(বাংলা সংস্করণ, ১৮৩৩)
১৮২৬ :হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও হিন্দু কলেজে অধ্যপকরূপে যোগ দেন বাংলার নবজাগরণের ইতিহাসে ডিরোজিও এক অতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে কলেজে অধ্যাপনায় যোগ দেন ছাত্ররাও প্রায় তাঁর সমবয়সী, কিন্তু তাঁর গভীর জ্ঞান, বিশ্লেষণী প্রতিভা, বাগ্মিতা ও সহৃদয়তা ছাত্রদের মুগ্ধ ও আবিষ্ট করে ফেলে তিনি অসম্ভব ছাত্র-সুহৃদ হয়ে দাঁড়ান তাঁর কথা ছাত্রদের কাছে অলঙ্ঘনীয় শেষ কথা হয়ে ওঠে তিনি ছাত্রদের ধর্মীয় কুসংস্কার, জাতিভেদ ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন করেন মুক্ত মনে ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ইত্যাদি আলোচনার জন্য একটি সংগঠনও তৈরি করেন তিনি ছাত্রদের যেমন সচেতন করেন তেমনি তাদের মধ্যে দেশাত্মবোধও জাগিয়ে তোলেন তিনি নিজে ছিলেন এয্ংলো-ইন্ডিয়ান তাই প্রকৃত মুক্তমন না হলে এদেশীয় ছাত্রদের মধ্যে ইংজেরদের স্বার্থবিরোধী দেশাত্মবোধ জাগাতেন না ডিরোজিওর ছাত্রদের অনেকেই পরবর্তী কালে দেশখ্যাত হন এঁরা সে কালে ‘ইয়ং বেঙ্গল’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন এঁদের আলোচনায় খ্রিস্ট ধর্ম ও ইংরেজ শাসন নিয়েও বিভিন্ন সমালোচনা হত কলেজ কর্তৃপক্ষ ভীত হয়ে এসব নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা বন্ধ করে দেন তাতে কিন্তু ছাত্রদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায় তাঁদের কাজকর্মে অভিভাবকেরাও ভীত হয়ে পড়েন শেষে ভীত হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিরোজিওকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন ডিরোজিও সে সুযোগ না দিয়ে
আগেই পদত্যাগ করেন (২৫ এপ্রিল, ১৮৩১) বিপুল উদ্দীপনা ও মুক্তমন শিক্ষার এই হয় শেষ পরিণতি পদত্যাগের কয়েক মাস পরে এই আদর্শ শিক্ষক প্রকৃতপক্ষে অনাহারে মারা যান(১৮৩১) এই অল্পবয়সী তরুণ অধ্যাপকের অভাব আর কি পূরণ হওয়া সম্ভব? কোলকাতার মল্লিক বাজারে পুরানো এক খ্রিস্টিয় কবরস্থানে তাঁর স্মৃতি বেদী বেশ অনাদরেই পড়ে আছে
১৮৩০ :ব্রাহ্মসমাজ মন্দির প্রতিষ্ঠা
১৮৩৩ :হটন()-কৃত বাঙ্গালা-ইংরেজি অভিধান রামমোহন রায়ের মৃত্যু
১৮৩৪ :রামকমল সেন-কৃত ইংরেজি-বাঙ্গালা অভিধান
১৮৩৮ :আদালতে ফারসির পরিবর্তে ইংরেজির প্রচলন
১৮৪৬ :দ্বারকানাথ ঠাকুর দ্বিতীয়বার ইংলন্ডে গিয়ে সেখানে প্রয়াত হন(১ আগস্ট) ঠাকুর পরিবারের রামলোচন নিঃসন্তান ছিলেন বলে ছোটভাই রামমণির পুত্র দ্বারকানাথকে দত্তক নেন দ্বারকানাথ শৈশবে ফিরিঙ্গি স্কুলে ইংরেজি শেখেন, যৌবনে ইংরেজ ব্যারিস্টারের কাছে আইন শেখেন তাছাড়া, আরবি, ফার্সি ভাষাও শেখেন রেশমের ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন পরে নুনের ব্যবসা, নীল, চিনি, ব্যাঙ্ক, বিমা, কয়লাখনি, জাহাজ, সংবাদপত্র প্রভৃতির ব্যবসা করে বিপুল অর্থের অধিকারী হন তাঁর নাম হয়ে যায় ‘প্রিন্স দ্বারকানাথ’ ব্যবসালব্ধ অর্থ দিয়ে তিনি নতুন নতুন জমিদারি কেনেন ১৮৪২-এ ইংলন্ডে যাবার কালে পোপের সঙ্গে দেখা করেন, লন্ডনে মহারানি ভিক্টোরিয়ার নিকট-সংস্পর্শে আসেন, দেশে ফেরার পথে ফ্রান্সের সম্রাট লুই ফিলিপের সঙ্গে দেখা করেন ১৮৪৫-এ দ্বিতীয়বার ইংলন্ডে যাবার পথে ইতালির রাজার সঙ্গে দেখা করেন দ্বারকানাথ ছিলেন নানা সমাজসেবা মূলক প্রয়াসের সঙ্গী এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি পৃষ্ঠপোষক সতীদাহ রোধ, দেশে মেডিক্যাল শিক্ষা প্রসার, সংবাদপত্রের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ইত্যাদি ব্যাপারে তিনি ছিলেন অগ্রণী বাংলার শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতির উদ্ভাসে ঠাকুর বাড়ির যে অবদান তা দ্বারকানাথের সময়েই সূচিত হয়ে প্রবাহিত হতে থাকে
১৮৪৭ :ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-কৃত ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’
১৮৫০ :শ্যামাচরণ সরকার-রচিত বাঙ্গালা ব্যাকরণ(ইংরেজিতে)
১৮৫৬ :বিদ্যাসাগরের নিরলস আন্দোলনের ফলে
বিধবা বিবাহ আইনসিদ্ধ হয়
১৮৫৭ :কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা
১৮৫৮ :প্যারীচাঁদ মিত্র(টেকচাঁদ ঠাকুর) রচিত ‘আলালের ঘরের দুলাল’(উপন্যাস)
১৮৬১ :‘মেঘনাদবধ কাব্য’ মধুসূদন দত্ত
১৮৬৩ :‘হুতোম পেঁচার নক্শা’ -- কালীপ্রসন্ন সিংহ__
১৮৬৫ :‘দুর্গেশনন্দিনী’ -- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
লিখিত প্রথম উপন্যাস
১৮৬৭ :কোলকাতা-দিল্লি রেল সংযোগ স্থাপন
১৮৬৯ :কেশবচন্দ্র সেন ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ নামে ঈশ্বর চিন্তার এক নতুন ধরনের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এর আগে তিনি ১৮৫৭-তে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন ভারত সংস্কৃতির প্রকৃত ঐক্য গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন
সর্বভারতীয় ব্যক্তিত্ব মুম্বই শহরে তার অনুসারী সংগঠন, ও তামিলনাড়ুতে ২৯টি ব্রাহ্মসমাজ শাখা গড়ে ওঠে
১৮৭২ :বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা প্রকাশ
১৮৭২-৭৯ :বীমস্(Beams)-কৃত আধুনিক আর্যভাষাগুলির
তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৭৭ :রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর-কৃত তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৮০ :হ্যরন্লে (Hoernle)-কৃত আধুনিক আর্যভাষার তুলনাত্মক ব্যাকরণ
১৮৮৫ :জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় Womesh Chandra Bonerje(W C Bonerjee) ১৯০২ খ্রিঃ স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে ইংলন্ড যাত্রা করেন
১৮৯০ :গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন তিনিই ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রথম ভারতীয় ভাইস চ্যান্সেলর
১৮৯৩ :বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ প্রতিষ্ঠা
১৮৯৫-৬ :গ্রিয়ার্সন (Grierson)-কৃত আধুনিক আর্যভাষার তুলনাত্মক ব্যাকরণের প্রারম্ভ
১৯০০খ্রিস্টাব্দ__
প্রথমার্ধ :এন্টনি কবিয়াল জাতিতে পোর্তুগিজ, খ্রিস্টান বাঙালির সংস্কৃতি ও হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন কবিয়াল রূপে খ্যাতি অর্জন করেন কথিত আছে যে মধ্য কোলকাতার বৌবাজারে নাকি তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালী, ফিরিঙ্গি কালী নামে খ্যাত
১৯০২ :অনুশীশন সমিতি -- বিপ্লবী রাজনৈতিক সংগঠন কোলকাতায় গঠিত হয় এধরনের বিভিন্ন সংগঠন বাংলায় গড়ে ওঠে, অনুশীশন সমিতির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল
১৯০৩ :গ্রিয়ার্সন (Grierson)-কৃত Linguistic Survey of India-র পত্তন, বাঙ্গালা ভাষা-বিষয়ক প্রথম খণ্ড
১৯০৫ :বঙ্গ-ভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলন লর্ড কার্জনের শাসনকালে
১৯০৮ :ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশিষ্ট বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত এবং সত্যেন বসুর মৃত্যু দণ্ড আলিপুর বোমা মামলায় ধৃত হয়ে জেলের ভিতরেই রাজসাক্ষী নরেন গোঁসাইকে হত্যার অভিযোগ ছিল
১৯০৮ :বি.এ. পরীক্ষা অবধি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য আবশ্যিক পাঠ্য-বিষয়-রূপে নির্ধারিত
১৯০৮ :ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভারতের প্রথম শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়(১১ আগস্ট) অত্যাচারী ইংরেজ রাজকর্মচারী কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে গিয়ে তার ঘোড়ার গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন(৩০ এপ্রিল, ১৯০৮), কিন্তু গাড়িতে সে দিন অন্য লোক ছিলেন, ফলে উদ্দশ্য ব্যর্থ হয় অন্য লোক মারা যায় পরে ক্ষুদিরাম ধরা পড়েন, সহযোগী প্রফুল্ল চাকি ধরা পড়ার আগেই নিজের রিভলবারের গুলিতে আত্মহত্যা করতে সমর্থ হন(১ মে, ১৯০৮)
১৯১১ :বঙ্গ-ভঙ্গ রদ ও ভারতের রাজধানী কোলকাতার পরিবর্তে দিল্লি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা (১২ ডিসেম্বর)
১৯১২ :দিল্লি দরবারের ঘোষণা অনুসারে ভঙ্গ বঙ্গ আবার যুক্ত হয়
(১ জানুয়ারি)
১৯১৩ :সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেলেন(১৩ নভেম্বর)[সুইডিশ একাডেমি প্রদত্ত ইউরোপের বাইরে এটাই প্রথম]
১৯১৬ :হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক ‘চর্য্যাপদ’(বৌদ্ধগান ও দোহা) প্রকাশ
১৯১৭ :বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ কর্তৃক ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ প্রকাশ
১৯১৭ :জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের বাঙ্গালা অভিধান,(২য় সংস্করণ, ১৯৩৭)
১৯১৯ :পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরের পূব দিকে অবস্থিত জালিয়ানওয়ালাবাগ উদ্যানে একটি সভায় ইংরেজ জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে সৈন্যরা নিরীহ মানুষের উপরে বেপরোয়া গুলি চালিয়ে ৩৭৯ জনকে হত্যা করে, আহত হন ১২০০ মানুষ এই নারকীয় ঘটনায় সারাদেশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ঘটনার প্রতিবাদে 'নাইট' খেতাব ত্যাগ করেন ব্রিটিশ সরকারই এই সর্বোচ্চ-সম্মানে তাঁকে ভূষিত করেছিল সম্মান জানাবার জন্য
১৯২১ :প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও দয়ারাম সাহানির সহযোগিতায় জন মার্শালের নেতৃত্বে মহেঞ্জোদরো ও হরপ্পার অতি প্রাচীন সভ্যতার সন্ধান পাওয়া যায়
১৯২৫ :মাত্র ৫৫বছর বয়সে বিশিষ্ট জননায়ক দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ প্রয়াত হন তিনি স্বরাজ্যদল গঠন করে দেশব্যাপী আলোড়ন তোলেন এবং ১৯২৩ খ্রিঃ নির্বাচনে বিপুল সাফল্য লাভ করেন গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলেনর আহ্বানে তিনি তাঁর বিপুল আইন ব্যবসা ছেড়ে দেশের কাজে নেমে পড়েন কথিত আছে যে বিলেত থেকে তাঁর পোষাক ধুয়ে আনা হত জীবিকা ত্যাগ করে কষ্টে জীবন অতিবাহিত করেন, স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে দেশের লোক তাঁর নাম দেন 'দেশবন্ধু' কোলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর সুউচ্চ স্মৃতি সৌধ আছে
১৯৪০ :কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার মাধ্যমে প্রবেশিকা
পরীক্ষা-গ্রহণ
১৯৪১ :রবীন্দ্র তিরোধান
১৯৪৭ :ভারতের স্বধীনতা লাভ(১৫ আগস্ট), এবং বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা
১৯৪৯ :ভারত সরকারের সঙ্গে কোচবিহার মহারাজের চুক্তি অনুসারে কোচবিহার ভারতের অঙ্গীভূত হয়(১২ সেপ্টেম্বর) কোচবিহারের রাজভাষা ছিল বাংলা এখন কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা
১৯৫২ :পূর্ব পাকিস্তানের(বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ) ঢাকায় বাংলা ভাষার দাবিতে ভাষা আন্দোলন(২১শে ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার) বহু আহত ও নিহত ভাষাশহীদ হন-- (১)আবদুল জব্বার, (২)রফিক উদ্দিন আহমেদ, (৩)আবুল বরকত, (৪)সালাউদ্দিন, (৫)নাম-না-জানা শহীদ
২২শে ফেব্রুয়ারি, (৬)সফিউর রহমান, (৭)আউয়াল,
(৮+৯)নাম-না-জানা শহীদ
১৯৬১ :ভারতের শিলচর অসমে বাংলা ভাষার দাবিতে ভাষা আন্দোলন(১৯মে, শুক্রবার) ভাষাশহীদ হন -- (১)কমলা ভট্টাচার্য,(২)বীরেন্দ্রনাথ সূত্রধর, (৩)চণ্ডীচরণ সূত্রধর, (৪)শচীন পাল, (৫)কুমুদ দাস, (৬)কানাইলাল নিয়োগী, (৭)সুনীল সরকার, (৮)সত্যেন্দ্র দেব, (৯)তরণী দেবনাথ, (১০)হিতেশ বিশ্বাস, (১১)সুকোমল পুরকায়স্থ
১৯৭১ :পূর্ব-পাকিস্তান বিলোপপূর্ববঙ্গে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা(১৬ডিসেম্বর)
২০০০০খ্রিস্টাব্দ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন