শনিবার, ১০ মে, ২০১৪

বাংলা লেখা কেমন হবে-এক-- ২০১১


বাংলা লেখা কেমন হবে-এক --২০১১





বাংলাভাষা সমিতির পত্রিকা “বাভাস”
সেখানে এই লেখাটি জুন ২০১১ থেকে 
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে৤
সেটিই এখানে আপলোড করা হল৤  






সবটা ঠিক মতো পড়তে হলে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করুন এখানে ক্লিক করে:--








সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

এবং


অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)

(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)

on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options > contents
              Fonts & Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced...
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -->OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -->OK
  --> OK

          এবারে ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে একই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤












বাংলা লেখা কেমন হবে-এক




বাভাস


জুন--২০১১



বাংলা লেখা কেমন হবে

মনোজকুমার দ. গিরিশ 



কিছু কথা



    ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে যখন পঃবঙ্গ বাংলা আকাদেমি তৈরি হতে যাচ্ছে তখন সরকারি উদ্যোগে একটি বড় সেমিনার হয় ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে৤ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা নিয়ে সেখানে বলার জন্য আমার ডাক পড়ে৤ কারণ তার আগে ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ দৈনিক সংবাদপত্র ‘আজকাল’-এ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা নিয়ে আমার একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়৤ সেই সূত্রেই তাঁরা আমাকে ডাকেন৤ আমি আমার পেপারটি পড়ি৤ লেখাটিতে যুক্তবর্ণ নিয়ে যে মূল ধারণাটি প্রকাশিত হয় সেটি পরে বাংলা আকাদেমির বানান অভিধানে কিয়দংশে প্রতিফলিত হয়৤ সেখানে যেভাবে যুক্তবর্ণ লেখা হয় তা অনেকখানিই সরল হয়ে এসেছে৤ বর্তমানে ষ+ণ=

 লেখার স্থানে

, এবং




ঞ্চ ঞ্ছ ঞ্জ=

লেখার প্রবণতা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য৤ আমার প্রস্তাব হরফের উপরে হরফ না চাপিয়ে দুটি হরফই পাশাপাশি রাখা হবে, কেবল প্রথম হরফটি আয়তনে ছোট হবে--ষ+ণ=ষ্ণ৤ কোলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এশিয়াটিক সোসাইটির সর্বভারতীয় ওরিয়েন্টাল সেমিনারে আমি বাংলা যুক্তবর্ণ নিয়ে আমার ধারণাটি উপস্থিত করায় তা জ্ঞানচারীদের বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ও সম্বর্ধিত হয়৤ পরে সাপ্তাহিক “দেশ” পত্রিকায় আমার নিবন্ধটি প্রকাশিতও হয়(১৯৮৭)৤

         প্রথমে মানুষ ছবি ব্যবহার করে ধ্বনি বোঝাবার উপায় বের করল, যেমন 
মিশরে

ইত্যাদি৤ পরে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে ধ্বনি বোঝাতে লাগল৤ ভারতে ব্রাহ্মী 


 --এভাবে একটু একটু করে মানুষের ভাষা ও লিখন পদ্ধতির অগ্রগমন ঘটে৤



আমরা দেখেছি প্রাচীন দিনে মানুষ হরফের উপরে হরফ না চাপালে তাদের ধ্বনি-সংযুক্তি অনুভব করতে পারত না৤ 


তাই যুক্তধ্বনি বোঝাবার জন্য হরফের উপর হরফ চাপিয়ে যুক্তহরফ বা যুক্তবর্ণ তৈরি করা হত৤ পরবর্তীকালে মানুষের মেধা যখন বিমূর্ত চেতনাকে ধারণ করতে শিখল তখন হরফ পাশাপাশি বসিয়ে যুক্তবর্ণ তৈরি করতে আরম্ভ করে, এবং এই ধরণের যুক্তবর্ণ থেকেই তারা যুক্তধ্বনি অনুভব করতে শেখে৤ ইংরেজিতে যুক্তধ্বনি বোঝাবার জন্য প্রাচীন দিনের সেই হরফের উপর হরফ চাপানোর অপ্রত্যক্ষ স্মৃতি এখনও খানিকটা রয়ে গেছে বটে(æ œ &), কিন্তু আমাদের বাংলায় রয়ে গেছে সে সবের প্রায় পুরোটাই৤বাংলা যুক্তবর্ণের এই স্তিমিত-গতিসম্পন্ন মণ্ডহরফ ব্যবস্থার অবসান হওয়া দরকার৤ বাংলায় ইউনিকোড ফন্ট তৈরি করে লেখালিখির কাজ করার সময়ে আমি যে ফন্টটি প্রথমে তৈরি করি, তা ‘ওয়ার্ড এক্সপি’ ফাইলে ভাল কাজ করছিল৤ পরে আরও উন্নত “ওয়ার্ড৭” আসে৤ সেখানে এই ফন্টে কাজ করতে কিছুটা অসুবিধা দেখা গেলে ‘অহনলিপি’ ফন্টটি তৈরি করি৤ সে জন্য আবার নতুন করে ফন্টটিকে সংশোধন করার উদ্দেশ্যে    মাইক্রোসফ্​টের গাইডলাইন বা নির্দেশনা আবার দেখতে গিয়ে দেখি, যেভাবে আমি বাংলায় যুক্তবর্ণ গঠনের কথা চিন্তা করেছি, 
মাইক্রোসফ্​টের গাইডলাইন বা নির্দেশনায় সেই পদ্ধতির মতোই এবারে কিছু নতুন উপস্থাপনা আছে৤ বাংলায় যে পদ্ধতিতে আমি সকল যুক্তবর্ণকে স্বচ্ছ করার কথা বলেছি, সেখানে তার কিছুটা পরোক্ষ সমর্থন আছে৤
Developing OpenType Fonts
for Bengali Script (3 of 3): Features
Example 2 - Reph feature applied with
multiple consonants.
 Note- reph is re-ordered to position on the
1st main consonant, not the half-form: 



This feature is applied to all consonants preceding the ‘main’ consonant.

Half feature substitutes half form of Ka :   



Half feature applied to multiple consonants:   



অথচ বাংলায় যুক্তবর্ণ গঠনের সাধারণ রীতি হল--
 





লেখাই সাধারণ নিয়ম৤ 

স+দ+ক= স্দ্ক, স+প+ল=স্প্ল-- এভাবে বাংলায় যুক্তবর্ণ লেখা হয় না, এটি ব্যতিক্রমী পথ, কিন্তু দেশের বা বিদেশের সকল কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্টের ক্ষেত্রে যুক্তবর্ণ গঠনের এটিই হবে সহজ এবং সরল পথ৤

          সংবাদপত্রে ঠিক এইভাবে চিঠিপত্র লিখে তা প্রকাশিত হচ্ছে৤ কারণ এটি বোধ্য এবং সহজ বলে তা পড়তে অসুবিধে হয়নি৤

                




আগস্ট-২০১১

 বাংলা লেখা কেমন হবে
বাভাস
বাংলা লেখা কেমন হবে
মনোজকুমার দ. গিরিশ 
   
পর্ব-২
          তৃতীয় শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্রীটি অঙ্ক কষতে গিয়ে বাবাকে প্রশ্ন করল-- বাবা, বাবা ’প্রদত্ত অর্থ তিনটাকা মাত্র‘ লিখতে গিয়ে লিখেছে-- প্রদ অর্থ তিনটাকা মা৤ এরকম লিখল কেন?
          বাবা তার জবাবে অনেক ব্যাখ্যা করে তাকে কোনও রকমে ব্যাপারটা বোঝালেন৤ ছাত্রী যতটা বুঝল তার চেয়ে বেশি চুপ করে অবাক হয়ে রইল বাংলায় এমন অদ্ভুত ব্যাপার দেখে৤
          বাংলাভাষা সমিতির পত্রিকা “বাভাস” বাভাস ছাপা হচ্ছে যে-লিখন পদ্ধতিতে তা অনেকের পছন্দ হয়নি৤ বরং বলা ভাল বেশিরভাগ লোকেরই তা পছন্দ হবেনা৤ কেন এমনভাবে “বাভাস” ছাপা হচ্ছে? তা নিয়ে আলোচনা করা যাক--
          আমরা দেখি আমাদের কলেজ ইউনিভার্সিটি যাওয়া মেয়েরা প্যান্ট শার্ট পরে চলাফেরায় কাজে কর্মে দিব্বি ঝকঝকে আধুনিক হয়ে উঠেছে৤ যদিও হয়তো পুরোটা মনে মনে এখনও তেমন মেনে নিতে পারিনি, এসব দেখলে এখনও একটু কষ্ট হয়৤ তবু আপত্তি তেমনটা নেই৤ বাংলা ভাষাকে এমনি প্যান্ট-শার্ট পরা ঝকঝকে আধুনিক করার প্রকল্প নিয়ে এখানে কিছু কথা বলা যাক৤ 
          শাড়ি পরে বাসে ট্রামে চলতে মেয়েরা নাস্তানাবুদ হয়, তাই তারা আজ আধুনিক উপযুক্ত পোষাক পরছে(ছেলেরা তো ধুতি ছেড়েছে কবে কোন্ কালে)৤ কম্পিউটার, ডেস্কটপ-প্রিন্টিং, ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদি ডিজিটাল জগতের আধুনিক বাস-ট্রামে চলতে বাংলা ভাষারও চাই সহজ উপযোগী পোষাক৤ নইলে তাকে সদাই নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে৤
          আগে স্মরণ করি-- ব্র্যাসি হ্যালহেড, চার্লস উইলকিনস্, পঞ্চানন কর্মকার, তাঁর জামাতা মনোহর মিস্ত্রি, এঁর পুত্র কৃষ্ণচন্দ্র মিস্ত্রি প্রমুখ পুরোধাগণকে, কারণ এঁদের হাতেই বাংলা ছাপার হাতেখড়ি৤
          পানা পুকুরে নামলে যেমন দুহাতে পানা সরিয়ে জল বের করে ডুব দিতে হয়, তেমনি বাংলা ছাপার পানাপুকুরে নামলে অনেক পানা সেখানে দেখা যাবে৤ বাংলা বর্ণ এবং স্বরচিহ্ন ও ফলাগুলিকে লিপিগত ভাবে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, স্বচ্ছ, অর্ধস্বচ্ছ, জটিল-
১৤স্বচ্ছ-- এ ও, ক খ গ চ ড ঢ ণ ত থ দ ন প ফ ব ভ ম য স হ ৎ , া , ( ‍্য )য-ফলা    
২৤অর্ধস্বচ্ছ-- অ, ঘ ঙ ছ জ ঝ ঞ ধ র ল শ ষ ড় ঢ় য় ং ঃ , ে 
৩৤জটিল-- আ ই ঈ উ ঊ ঋ ঐ ঔ, ট ঠ ঁ, ি ী            ৌ, 









          

  
যে-হরফ বা স্বরচিহ্নগুলির বাহু হরফের মাত্রার উপরে প্রসারিত সেগুলি সবই জটিল৤ যে ফলাগুলি অন্য বর্ণের সঙ্গে পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেগুলি অসম্পূর্ণ তাই জটিল৤ য-ফলা চিহ্নটি য-এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এটির হরফ-রূপ স্পষ্ট এবং সরল৤
          বাংলা হরফ এবং ভারতীয় অন্য লিপিগুলির সঙ্গে তুলনা করে এই পর্যায় ভাগ করা হয়েছে৤
কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট বা জটিল হরফ ব্যবস্থা যে-সকল বর্ণমালার, সেগুলির মধ্যে বাংলা হরফ লক্ষণীয়ভাবে সরল৤ বিশ্বের প্রায় সকল হরফই জটিল হরফ বা কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট হিসেবে গণ্য হবে৤ যে-লিপিগুলিতে ভাঁজ কম, অতিরিক্ত বাহু নেই বা কম, মাত্রা নেই সেগুলি সহজে লেখা এবং সহজে পড়া যায়, তাই সেগুলি স্বচ্ছলিপির মধ্যে পড়ে৤ যে লিপিগুলি হরফের মাত্রা ভেদ করে, বা অন্য ধরনের জটিলতা আছে সেগুলি স্বচ্ছ লিপির মধ্যে পড়ে না৤
          বাংলা লিপিসহ ভারতের বেশির ভাগ লিপিরই উৎস হিসেবে ধরা হয় ব্রাহ্মী লিপিকে৤ পাথরে খোদাই ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা একাধিক উদাহরণ পাওয়া গেছে৤ পাথরে খোদাই করতে হত বলে ব্রাহ্মীলিপি ছিল বেশ সরল গঠনেরই৤ পরে তা থেকে বিবর্তিত যেসকল লিপি এসেছে, তার লেখার মাধ্যম গাছের ছাল, পাতা, পশুর চামড়া ইত্যাদি নরম মাধ্যম৤ এসবে লেখাও হত নরম উপকরণ দিয়ে-- কালি, কাঠকয়লা, খাগের কলম, কীলক ইত্যাদি দিয়ে৤ ফলে সহজে লেখার সুযোগ আসায় লেখার সরলতা কমে পেঁচানো ভাব এসে গেল৤ যেমন আগে ব্রাহ্মীলিপিতে ’ক‘ লেখা হত “+” যেন ঠিক যোগচিহ্ন৤

                 




বাভাস
অক্টোবর-২০১১

বাংলা লেখা কেমন হবে
মনোজকুমার দ. গিরিশ 
পর্ব-২.১
          আগে ব্রাহ্মীলিপিতে ’ক‘ লেখা হত “+” যেন ঠিক যোগচিহ্ন৤ পরে নরম মাধ্যম ও নরম উপকরণে লেখার ফলে তাতে ক্রমে প্যাঁচ এসে গেল--
দ্রুত লিখতে গিয়ে এটা ঘটেছে৤ কালির আঁচড় সরল রেখার গায়ে জুড়ে গেছে৤ এভাবেই সেই সরল হরফসমূহ ক্রমে জটিল হয়েছে৥
বাংলা হরফের সাদৃশ্যমূলক স্তর:--
বাংলা বর্ণ এবং সংখ্যা চৌদ্দটি(১৪)পর্যায় বা স্তরে ভাগ করা যায়--
১)অ আ ত ভ ৩
২)ই হ ২
৩)উ ঊ ঙ জ ড ড় ৬
৪)ঋ ক ঝ ধ ব র ৰ ব(ৱ)
৫)এ ঐ ঞ
৬)ও ঔ
৭)[খ ঘ থ ম] য ষ য়
৮)চ ছ ৮
৯)ট ঢ ঢ়
১০)ণ ন [ল শ]
১১৤ ৎ‍ ‍ ‍ং
১২৤ ‍ঃ ০ ৪ ৭
১৩৤ ১ ৯
১৪)বিবিধ-- ঈ গ ঠ দ প ফ স  ‍ঁ ৫
একটি মূল রূপ[ব]-কে ভিত্তি করে একাধিক বর্ণ --
ব র ক ধ ঝ ঋ ৠ ৱ ৰ   [৭+২]
বাংলা লেখার বৈশিষ্ট্য
---------------------------
১৤হরফ পাশাপাশি--অজ,আম,অংশ, কলম,কখন,তপঃ
২৤বর্ণ মিলিত করে -- অঁটা, গঁদ, চাঁদ
৩৤হরফ জুড়ে বা যুক্তবর্ণ করে উপরে-নীচে-- গর্ব, গ্লাস, প্রথম, স্পষ্ট
৪৤বর্ণ-চিহ্ন ব্যবহার করে--
          (ক)পাশাপাশি
                   (১)সামনে -- কাকা, দাদা, বাবা, মামা
                   (২)পিছনে -- দেশ, পেট
(খ)দুপাশ জুড়ে -- দোষ, ভোর
(গ)পিছনে বসিয়ে হরফ ঢেকে দিয়ে, সামনে ফেরানো চিহ্ন দিয়ে-- দিদি, শিশি
(ঘ)পিছনে বসিয়ে, পশ্চাদগতির ঊর্ধ্বাংশ সহ-- চৈত্র, বৈশাখ
বাভাস-৮
বাভাস
        (ঙ)সামনে বসিয়ে হরফ ঢেকে দিয়ে, পিছনে ফেরানো চিহ্ন দিয়ে-- গভীর, নদী
        (চ)হরফের নীচে -- ভুল, দূর, কৃশ
        (ছ)হরফের দুপাশ জুড়ে -- পশ্চাদগতির ঊর্ধ্বাংশ সহ-- গৌরব, নৌকা
৫৤হরফের ধ্বনি স্পষ্টতর করার জন্য এবং নিশ্চিত উচ্চারণ বোঝাবার জন্য বর্ণমালার বাইরের বিশেষ চিহ্ন হস্(্) বসাই-- গরীয়ান্, প্রাবৃট্, বাক্​রোধ, বিদ্যুদ্‌গর্ভ৤
          বাংলা বর্ণের বিচিত্র ব্যবহার
প্রাচীন দিনে(প্রায়)ঙ্গ  
রূপটি ব্যবহার করে অন্তত ৮ রকম সংযোগ বোঝানো হত--  




এই কথাটি আসলে হল-- সঙ্গীহীন ঈগল বিশুদ্ধ কুশ মুখে বিজ্ঞের মত নিরুদ্দেশ হল৤
ঙ্গ=





 কু কৃ গ্গ ঙ্গ জ্ঞ দ্দ দ্ধ (৮ রকম)

------------------------------------------------------------------
বাংলায় বর্ণসংযোগকালে(স্বরচিহ্ন বা ফলা ইত্যাদি) বর্ণগুলি যেভাবে মিলিত হয় তা হল--
১৤স্বরবর্ণের সঙ্গে ব্যঞ্জনবর্ণের সংযোগ-- অং আঁ উঃ
২৤ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরবর্ণের সংযোগ-- কা দি গী হু র্ঋ → (র্ঋ=র্+ঋ)
৩৤ব্যঞ্জনবর্ণে ব্যঞ্জনবর্ণে মিলন--স্ত ন্দ্র প্ল ব্ব 
৪*৤স্বরবর্ণে স্বরবর্ণে মিলন ঘটে না৤ তাহলে তো তা আর স্বরবর্ণই থাকে না৤
     [ঐ(ওই), ঔ(ওউ) হল সন্ধিস্বর৤ এখানে  বর্ণ সংযোগ ঘটেনি]৤
নীচে আমার রূপারোপিত বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা(কারিগরি যন্ত্রপাতির সাহায্যে আঁকা)--
এই হরফরূপের পেটেন্ট নেওয়া হয়েছে৤ 




                         


 
















বাভাস
ডিসেম্বর-২০১১


বাংলা লেখা কেমন হবে
মনোজকুমার দ. গিরিশ 
পর্ব-২.২
          গত অক্টোবর-২০১১ সংখ্যায় পর্ব ২.১-এর শেষে যে একটি ছবি যোগ করা হয়েছে তা দেখে কারও কারও মনে হতে পারে যে এটি বুঝি হিব্রু লেখা! আসলে যদি আলাদা আলাদা করে হরফ দেখানো যায় তখন আর এটি ততো দুর্বোধ্য মনে হবে না৤কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগে যখন এটি নিয়ে সেমিনার করা হয় তখন অধ্যাপকদের মনেও এমনি হিব্রু ধারণার সংকট দেখা গেছে৤ চিত্রটি আবার দেখা যাক--



























           লেখাটির শিরোনাম হল-’বাংলা ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালা‘৤

      এখানে যে নতুন গঠনের বাংলা লিপি দেখানো হয়েছে সেটিই হল- ’বাংলা ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালা‘৤ কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বার সময়ে ড্রইং শেখার শুরুতে লেটার ড্রইং করে হাত তৈরি করতে হয়৤ আর যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় ইংরেজিতে, তাই ইংরেজি হরফের লেটার ড্রইং শেখানো হয়, সেখানে বাংলার কোনও জায়গা নেই৤ তাই বাংলাতে সেকাজটি করার জন্য বাংলা হরফ অংকন করা হয়েছে৤ কাজটি করতে বছর দুয়েক সময় লেগেছে৤ যেহেতু আগের কোনও উদাহরণ নেই তাই প্রতিটি পদে নতুন পথ করে করে এগোতে হয়েছে৤ নতুন হরফের পরিচয় করা যাক-- 





(সব হরফ দেখানো হয়নি)৤

যে কথাটি উপরে লিখে দেখানো হয়েছে সেটি হল--
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা হৈ-হৈ করে উঠল-- ওঃ, থামো বুঝেছি বড্‌ডো পুরানো ঢঙের গল্প--মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি-- এই নীতি যার না? কথাটির মধ্যে বাংলা সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জনবর্ণ, স্বরচিহ্ন, ফলা ইত্যাদি আছে৤ ইংরেজিতে এমন বাক্য আছে, বাংলায় ছিল না তাই তৈরি করা হয়েছে৤ শেষ লাইনে বিশেষ ধরনের রূপে লেখা আছে ’বাংলাভাষা‘ ”বন“ ’বাংলা‘৤ 

     ইন্টারনেটে এটি দেখে বাংলাদেশে এমনি বাক্য গঠন করার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু সঠিক অর্থপূর্ণ বাক্য তারা গঠন করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন৤ যদিও বলেছেন আমার নির্মিত এই বাক্যটি আড়ষ্ট৤ তাঁদের কথা সঠিক৤  
       কারিগরি হরফ গঠনের কাজটি করার সময়ে দিল্লিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি পড়তেন শিবরঞ্জন মণ্ডল মহাশয়, তিনি সেখানে অন্যভাষীদের বাংলা শেখানোর উদ্যোগ নেন৤ বাংলা বর্ণমালার সঙ্গে মিল রেখে একই ধরনের হরফরূপগুলি আগে শেখান৤ দেখেন যে হিন্দিতে যুক্তবর্ণ লেখা হয় একটি হরফের অর্ধেক টুকরো অন্য হরফে জুড়ে৤ তিনি সেটা আমাকে জানান৤ আমি সিদ্ধান্ত নিই কোনও হরফের অর্ধেক বা টুকরো অন্য হরফে জুড়ে বাংলায় যুক্তবর্ণ লেখা হবে না৤ সেই অনুসারে বাংলায় হরফের কারিগরি রূপ দেওয়া হয়৤ ’আজকাল‘ সংবাদপত্রে এটি প্রকাশিত হয়৤ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি গঠনের আগে  একটি সরকারি সেমিনার হয়, সেখানে আমন্ত্রিত এই নিবন্ধটি পড়া হয় ও পরে আকাদেমি প্রকাশিত প্রথম  সংকলন গ্রন্থে এটি প্রকাশিত হয়৤
   বাক্যটি পরে আরও পরিমার্জন করে পূর্ণাঙ্গ করা হয়৤ নিবন্ধটি আমার একটি ইন্টারনেট ব্লগে প্রকাশ করা হয়েছে৤ ব্লগটির নাম হল:


এখানে স্থানাভাবে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়৤
     ইংরেজি লেখা হয় রোমান হরফে৤ তার সংখ্যা যেমন কম(২৬), তেমনি তার গঠন অতীব সরল৤ এই সরলতাই তার ব্যাপক ব্যবহারের মূল চাবিকাঠি৤ বাংলাতেও সেই চাবিকাঠির সন্ধান করা হয়েছে এই নতুন গঠনের বাংলা হরফে৤ এই হরফকে ভিত্তি করেই বাংলা হরফের একাধিক আলংকারিক রূপও দেওয়া হয়েছে৤ তার কিছু উদাহরণ 


                   






     বাভাস-৯          (চলবে)





 

কোন মন্তব্য নেই: