বাংলা লেখা কেমন হবে-চার--২০১৪
বাংলাভাষা সমিতির পত্রিকা “বাভাস”
সেখানে এই লেখাটি জুন ২০১১ থেকে
ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশিত হয়েছে
সেটিই এখানে আপলোড করা হল
সবটা ঠিক মতো পড়তে হলে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করুন এখানে ক্লিক
করে:--
সঙ্গে
দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14
Default text font setting)
Default
text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
এবং
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet
setting)
(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)
on
internet(Mozilla Firefox)
(top
left) Tools
Options > contents
Fonts & Colors
Default font:=AhanLipi-Bangla14
Advanced...
Fonts for:
=Bengali
Proportional
= Sans Serif, Size=20
Serif=AhanLipi-Bangla14
Sans
Serif=AhanLipi-Bangla14
Monospace=AhanLipi-Bangla14, Size=20
-->OK
Languages
Choose your preferred Language for
displaying pages
Choose
Languages in order of preference
Bengali[bn]
-->OK
--> OK
এবারে
ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে নেটে একই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে
বাংলা লেখা কেমন হবে-চার--২০১৪
ফেব্রুয়ারি-২০১৪
বাভাস
বাংলা লেখা কেমন হবে
মনোজকুমার দ. গিরিশ
পর্ব-১৪
বাংলা লিখতে গিয়ে যে-বানান সমস্যা হয়, তা কোথায় সবচেয়ে বেশি, বা
কোন্ কোন্ বানানে বেশি বেশি ভুল হয় ?
প্রশ্নটা একটু অস্বস্তিকর, কারণ ভুল তো হয় অনেকই
কিন্তু কোথায় ঠিক সবচেয়ে বেশি ভুল হয় তা কি নির্ধারণ করা যায়? হ্যাঁ, সেটা নির্ধারণ করা যাবে যদি সেই সেই
ব্যবহারের হার বা তুলনা বিচার করা যায় যেমন বাংলায় “র”-এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি কারণ ‘র’ মুক্তবর্ণ হিসেবে ব্যবহৃত তো হয়ই, এর আবার অন্য দুটি
ব্যবহার আছে,তা হল রেফ এবং র-ফলা তাই সব মিলিয়ে এর
ব্যবহার সব চেয়ে বেশি আবার কোন্ হরফ সবচেয়ে বেশিবার শব্দের শুরুতে ব্যবহার করা হয়?
তা হল ‘স’ যদিও ধ্বনি
হিসেবে এর ব্যবহার কিন্তু খুবই কম আসলে আমরা সর্বত্র ‘শ’
উচ্চারণ করি, ‘স’ প্রায় করিই না, আর ‘ষ’ তো কখনোই করি না কারণ বাংলায় আসলে ‘ষ’ নেই তাই আমরা যখন শিশুদের শেখাই তখন সেভাবেই শেখাই, অর্থাৎ ‘ষ’ শেখাই না, আর ‘স’ স্থানে ‘শ’ শেখাই কারণ এটাই আমাদের ভাষার রীতি বাংলায় অনেক
বর্ণ আছে যেগুলি বাস্তবে নেই, কেবল তার লিখিত চেহারা আছে,
আর সেই চেহারা দেখে আমরা মনে করি যে এগুলি সত্যিই আছে
ভাষাবিজ্ঞানীরা বলেন বাংলাভাষার জন্মের আগেই “ঋ” বর্ণ হিসেবে লুপ্ত, অথচ সেই ঋ আমরা রেখে দিয়ে
বর্ণমালার ভার বাড়িয়েছি এতে আমাদের মানিব্যাগের চেহারাটা বেশ স্ফীত হয়েছে ঠিকই
কিন্তু কেনাকাটার বেলায় সে টাকা অচল বলে বুঝতে পারছি কিন্তু ফেলতে পারছি না
বাংলা বর্ণমালার আমূল সংস্কার করেছিলেন বিদ্যাসাগর, সে তো
বহুকাল আগের কথা, তার পরে কত শীতগ্রীষ্ম বয়ে গেছে, বাংলা বর্ণমালার আর সংস্কার হয়নি কে করবেন সেটাই তো আসল প্রশ্ন!
বিদ্যাসাগর শিশুদের জন্য বর্ণপরিচয়ের বই লিখেছিলেন, যে
বই পড়ে আজও বাঙালির হরফ পরিচয় ঘটে সে-বই লিখতে গিয়ে সম্ভবত তিনি বাংলা বর্ণমালার
সমস্যাটা অনুধাবন করে থাকবেন বড়দের জন্য বই লেখা সহজ, কারণ
তারা অনেক কিছু জানে বোঝে, তারা তর্ক যুক্তি বোঝে, কিন্তু শিশুর কোনই বোধ নেই, তাই তার জন্য বই লেখা,
হরফ পরিচয়ের বই লেখা সবচেয়ে কঠিন কাজ, আর সেই
কঠিন কাজটিই বিদ্যাসাগর করেছেন, এবং সবচেয়ে সফলও হয়েছেন সে
জন্যই এখনো বাঙালি শিশুরা তাঁর বই প’ড়ে জীবন শুরু করে
শোনা যায় স্কুল পরিদর্শনের কাজে যাবার কালে পালকিতে বসে তিনি
বইটি লিখেছিলেন তাই এ অনুমান করার সঙ্গত কারণ আছে যে পড়তে গিয়ে যে শিশুরা সমস্যায়
পড়ে তা তিনি অন্তর দিয়ে অনুভব করেন এবং তা প্রতিকারের উদ্যোগ নেন আর তা যে
দারুণভাবে সফল তা তো এতকাল পরেও তার বইয়ের জনপ্রিয়তা দেখে বোঝা যায় পরে
বিদ্যাসাগর তাঁর বইয়ের কিছু কিছু সংশোধন করেন, কারণ তিনি অনুভব করেন যে বর্ণ পরিচয়ের সময়ে আমরা ঠিক যেভাবে বর্ণের
উচ্চারণ করি, প্রথম শব্দ গঠনের সময়ে তা ঠিক ঠিক সেইভাবে
অনুসরণ করি না যেমন-- জল, ফল, দল
ইত্যাদি শব্দে এগুলির উচ্চারণ জল্ ফল্ দল্ ইত্যাদি, এরা
জলঅ, ফলঅ, দলঅ নয় কিন্তু যদি লেখা
হয়-- জড়, রত, শত, শশ, সই, সহ ইত্যাদি তবে ঠিক যে
উচ্চারণে বর্ণগুলি শেখা হয় ঠিক সেই উচ্চারণেই শব্দও শেখা শুরু হয়, ফলে শব্দে বর্ণে যে অমোঘ সাযুজ্য অনুভব করা যায় তা শিশুদের সহজে এগিয়ে
দেয় নয়তো ‘জল, ফল’ পড়তে গিয়ে পড়ে জলঅ, ফলঅ এমনকী, কেবলমাত্র স্বরবর্ণ শেখা হলেই শিশুরা শব্দ গঠন করতে পারবে, যেমন-- উই, এই, ওই
এমনিভাবে
ব্যঞ্জনবর্ণ শেখার সময়েও তারা যে নতুন নতুন শব্দ গঠন করতে পারবে তা আর অবাক হবার
ব্যাপার নয় তাই প্রথম দিকে অ-কারান্ত শব্দ তথা স্বরান্ত শব্দ গঠন শেখা হলে তার
পরে শেখা হবে, ব্যঞ্জনান্ত শব্দ তথা
হলন্ত শব্দ বাংলা বর্ণমালার একটি গুণ বা দোষ আছে, তা হল
প্রতিটি ব্যঞ্জনের সঙ্গে একটি করে অ-ধ্বনি স্বতঃযোজিত (inherent) থাকে, ফলে তা উচ্চারণ করা সহজ হয় আসলে সেজন্যই তা
উচ্চারণ করতে পারি, নয়তো, রোমান হরফের
মতো তা নানা বিশেষণ দিয়ে বোঝাতে হত কে, এল, এম--ইত্যাদি, এদের উচ্চারণ কিন্তু ক্, ল্, ম্ যা উচ্চারণ করা দুরূহ কাজ বাংলায় এই যে
অন্তর্নিহিত ‘অ’, তা কিন্তু বর্ণগঠনে
দেখানো হয় না দেখাতে হলে বাংলা ‘পড়া’ কঠিন
হয়ে পড়বে ধরি অ-এর জন্য চিহ্ন =৹ লেখা হল, কারণ বাংলার ১১টি
স্বরবর্ণের ১০টির স্বরচিহ্ন আছে আর অন্যটির চিহ্ন দৃশ্যত নেই, কিন্তু কার্যত আছে সেটির একটি দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপ হল, অ=৹ চিহ্ন শিশুদের জন্য হরফপরিচয়ের একটি বই দেখুন বাংলাবিশ্ব (http://bangla-biswa.blogspot.in/2008/11/blog-post_30.html)
ব্লগে